শনিবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

স্যাংশনের হুমকী দাতাদের প্রতি একটি খোলা চিঠি

স্যাংশনের হুমকী দাতাদের প্রতি : একটি খোলা চিঠি

মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি

বিশ্বের সবচেয়ে মোড়লিপনার দাবীদার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কদিন পর পর একটা হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। একে আমি হুমকী না বলে চোখ রাঙানী বলতে পারি। আর এর সঙ্গে সঙ্গে দেশে পাগলের উৎপাত বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো এক জায়গা থেকে তথাকথিত নাগরিক টিভি নামে এক অনলাইন মিডিয়া থেকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনেতা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা “Economist” পত্রিকার ভাষায় “ Asian’s iron Lady ” শেখ হাসিনাকে সুদখোর নোবেল লরেট ড. ইউনুসের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে দেশত্যাগ করার হুমকী দিয়েছে। ওর নাম নাকি জ্যাকব মিলটন। ও নাকি মানবধিকার ক্লিনার। ৩০ বছর যাবৎ যুক্তরাষ্ট্রে আছে। ক্লিনার এ জন্যে বললাম তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে যারাই জবের তালাশে ওসব দেশে যাক অথবা বার করতে যাক তাদের ৯৯% ক্লিনার বা সুইপারের কাজ করে। জ্যাকব মিলটনও এর ব্যাতিক্তম হতে পারেনা। আরেক পাগলের নাম পিনাকী ভট্টাচার্য। অনলাইন মিডিয়ায় তার কাজ হল নেত্রী সম্পর্কে যা তা বলা (আমি উচ্চারণ করতে পারব না)। নাম দেখে মনে হয় ব্রাহ্মণ গোত্রীয়। থাকে শুনেছি ফ্রান্সে। ফ্রান্সে নিশ্চয়ই পাগলা গারদ আছে তাই সেখানে বেশিদিন হয়নি তাও এক দশকের কম নয়।

এমনি আরো বহু রাস্তার ধুলোবালি ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার পাবলিক টয়লেট সাপ করা রয়েছে যাদের আমি গোনায় ধরিনা। তারা কি বলল না বলল তাতে কারো কিছু আসে যায় না। মনে পড়ে ৬৯’ এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা মিছিল বের করতাম। মিছিল যখন রাস্তা দিয়ে যেত দুইপাশ থেকে নেড়ি কুত্তার দল আমাদের পাশে পাশে ঘেউ ঘেউ করে দৌড়াত। তাদের পাশাপাশি হাইকোর্টের বটতলার গাঁজাখো’র রাও নেমে আসত। তাতে আমাদের বিক্ষোভ মিছিলের ক্ষোভ এতোটুকু কমতোনা।

সে যা হোক ওই নেড়ি পাগলদের কথা বলা আমার এ খোলা চিঠির বিষয় নয়। আমি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মানবাধিকার ক্লিনার জ্যাকব মিলটন এবং ফ্রান্সে বসবাসকারী ড্রেন সাফ করা ব্রাহ্মণ পিনাকী ভট্টাচার্য এই দুই ক্লিনার নিয়ে কিছু কথা তুলে ধরে পশ্চিমাদের হুমকির প্রতিবাদ করব।

প্রথমে উল্লেখ করব জ্যাকব মিলটনের কথা। ৩০ বছর নাকি যুক্তরাষ্ট্রে আছে কিন্তু সভ্য হতে পারেনি। একটা কথা আছে না একটি চতুর্পদ জন্তু যার লেজ সোজা করার জন্য ৯০ বছর বাঁশের চুঙ্গা রেখে ছেড়ে দিলে আবার সেই বাঁকাই থাকে। কদিন আগে একটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম জ্যাকব মিলটন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বদিন আওয়ামীলীগের সমালোচনা করছেন তা করুন কিন্তু বিষয়টি যখন রাজনৈতিক তখন সমালোচনাও হওয়া উচিত রাজনৈতিক। কিন্তু সো কলড মানবাধিকার ক্লিনারের মুখে এত দুর্গন্ধময় ময়লা জমে আছে যে ও মুখ খুললে সেখানে আর থাকা যায় না। তার নোংরা মুখের আক্রমণ থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। এমনকি হাজার বছরের বাংলাদেশের ইতিহাসের মহামানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাদ যায় না। কি ভাষায় কথা বলেন আমি উল্লেখ করতে পারব না। জাতির পিতা সম্পর্কে কিভাবে কথা বলতে হবে তার জন্য আইনের গাইড লাইন থাকা দরকার। কেউ এই গাইডলাইন বঙ্গ করলে বা পাশ কাটিয়ে হাঁটলে তার বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা আইনেই থাকা দরকার। বা অন্য কোন পদ্ধতি এপ্লাই করা যায় কিনা ভেবে দেখা দরকার। বঙ্গবন্ধু’র ছোট মেয়ে শেখ রেহেনা রাজনীতি বা সরকারে নেই। তার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেন হাউজ অফ কমন্সের মেম্বার। এখন তার দ্বিতীয় টাউন চলছে। বঙ্গবন্ধু নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের ভিন দেশী বিভাষীদের ভোটে হাউজ অব কমনস-এর এমপি নির্বাচিত হওয়া আমাদের জন্য গর্বের। এমপি হবার পর ঢাকায় তার বক্তৃতা শুনেছি। এমনকি হাউজ অব কমন্স-এও তার বক্তৃতা শুনেছি। তার ইংরেজী বক্তৃতায় বৃটিশরাও অবাক তাকিয়ে রয়। দেশে বাংলা বলেন আমাদের মতই। আমাদের এখানকার কোন নেতা এমন বক্তৃতা করতে পারবেন বা করেছেন আমি শুনিনি। স্বাধীনতা উত্তরকালে দৈনিক ইত্তেফাকের রিপোর্টার হিসেবে আমার বিচরণ ছিল ঢাকা সহ দেশব্যাপী। তারপরও আমি শুনিনি। এমনকি মিলিটারি জিয়াউর রহমানের ‘বেসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এই বিকৃত উচ্চারণ আজও আমার কানে বাজে “নাউজুবিল্লাহ”। অথচ জ্যাকব মিলটন নামের মানবাধিকার ক্লিনার টিউলিপ সিদ্দিক এমপিকে নিয়ে অসভ্য উচ্চারণ করেছে। বাংলাদেশে থাকলে বা যুক্তরাষ্ট্র না পালালে এই ধরনের কথা বলার দৃষ্টান্ত দেখাতে পারত না। টিউলিপ সিদ্দিক জাতির পিতার নাতনি। গুড লুকিং এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। আর জ্যাকব মিলটনের চেহারাটাই কালো এবং শয়তানের মত দেখতে। চাঁদপুর কলেজে পড়াকালে দেখেছি পাশে একটি সুইপার কলনি ছিল তাতে জ্যাকব মিলটনের কালো বিকৃত চেহারার মোটা শরীর এর শুয়র দেখেছি। তাকানো যেত না বমি আসার ভাব হত। এটাকে দেখলেও একইভাবে বমির ভাব হয়। অনেক কষ্টে চেপে রাখতাম। আজকাল আর ময়লার গাড়ি নিয়ে কারো রাস্তায় আসার দরকার পড়ে না। এ কারণেই সুইপার থেকে ক্লিনার নাম ধারণ করেছে। কালো মোটকা জ্যাকব মিল্টনের কারো সমালোচনার আগে নিজের চেহারা আয়নায় দেখা দরকার। ঠিক আছে আমি মনে করি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধাকালে এই জ্যাকবদের বাপদের জন্ম হলেও হতে পারে। কিন্তু বাপ মা কি তাদের এতটুকু সভ্য ভাষা সেখাননি। একই অবস্থা পিনাকী ভট্টাচার্যেরও। নাম দেখে মনে হয় ব্রাক্ষণ কিন্তু কথা বলে নিম্ন শ্রেণীর হিন্দু মেথর বাড়ির বাসিন্দাদের মত। ওর বাপ মাও বোধহয় ওকে সভ্য ভাষা শেখাননি। না শিখিয়েই রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছে।

আরো খুচরা খাসরা বহু ক্লিনার ওসব দেশে রয়েছে। তাদের ব্যাপারে কিছু শোভা পায় না কারণ আমি ওদের মত মিথ্যুক এবং অশ্লীল উচ্চারণ জানি না। জানি কারো সমালোচনা করতে হলে ডিকশনারি ঘেটে খারাপ শব্দ ব্যবহার করার দরকার পড়ে, ভালো শব্দ দিয়েই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। কদিন আগে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের নির্বাচন হয়ে গেল। যেহেতু কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুলগান্ধীর মামলা ও সাজাপাপ্ত তাই পার্টির সাধারণ সম্পাদক শ্রীমতি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (চেহারায় চুরুতে কথাবার্তায় বক্তৃতা মঞ্চে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী) দিনের পর দিন ক্ষমতাসিন বিজেপির ব্যর্থতা নিয়ে বক্তৃতা করলেন একটাও অভদ্র ভাষা ব্যবহার করলেন না। কর্ণাটকে কংগ্রেস জিতল। কাজেই ওইসব টকশোকারদের শ্রীমতি গান্ধীর বক্তৃতা শোনা দরকার।
এতক্ষণ আমি জ্যাকব বা পিনাকির যে আলোচনা এবং অশ্লীল বক্তব্যের কথা বললাম সবই দেশে বর্তমান বিএনপির মিছিল সমাবেশের স্লোগান। তারা যেভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনা সম্পর্কে নোংরা স্লোগান ও মন্তব্য প্রচার করে এখানে বিএনপিও একইভাবে কথা বলে স্লোগান দেয়। কি নারী কি পুরুষ সবার মুখের ভাষা দুর্গন্ধময় অশ্লীল। আমার ধারণা যে পিনাকীরা বিএনপি জামাতের ভাড়া খাটে।বিএনপি নয়াপল্টনের সামনে রাস্তায় সমাবেশ করে যে কারণে বড় দেখায় দ্বিতীয়ত জামাতিরা প্রকাশ্য তৎপরতা না থাকায় তারা বিএনপি সমাবেশে মিছিলে যোগ দিয়ে মিছিল বাড়ায়। যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা এই পরিস্থিতিকে ২০১৩-১৪-১৫ অগ্নি সন্ত্রাস ও মানুষ হত্যার পরিস্থিতির পূর্বাভাস মনে করে। যেমন গাজীপুর সিটি নির্বাচনেও বিএনপি জামাত নৌকার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে তাদের টার্গেট নৌকাকে হারানো তাও কাজে লাগেনি। নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুন পাশ করে বলেছেন, ‘নৌকা হারেনি ব্যক্তি হেরেছে।’ এবং অচিরেই তিনি ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সাথে দেখা করবেন এবং জাহাঙ্গীরকে মাফ করে দিতে অনুরোধ করবেন।
এতক্ষণ যে আলোচনা করলাম তথাকথিত মানবাধিকার ক্লিনারদের নিয়ে তারা কিন্তু আমেরিকায় বিশেষ করে নিউইয়র্কে থাকে।এরা যখন বঙ্গবন্ধু তার পরিবার, জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ড, গ্রেনেড হামলা এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের একাত্তরের গণহত্যাকে সমর্থন করে, নিন্দা করেনা, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কোথায় থাকে। এমনকি এখনো জাতির পিতার খুনি মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এখনো আমেরিকায় বসবাস করছে তাদের প্রটেকশনে। এ কোন মানবাধিকার জানিনা। আমেরিকা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য পাগল একটা প্রশ্ন করি জজ বুশ কোন গণতন্ত্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিল? বিএনপির পক্ষে মানবাধিকারের কথা বলেন এখানেও বলতে পারি কি যে মিলিটারি জিয়াউর রহমান কোন গণতন্ত্রে ক্ষমতায় এসেছিলেন? তার আমলে ১৯ টি কুতে বিমানবাহিনীর অফিসার সহ কত জনকে সামারী ট্রায়ালের নামে হত্যা করা হয়েছিল? বিশেষ করে ১৯৭৭ সালের আগে পরে এ ব্যাপারে আমেরিকা কি প্রশ্ন করেছে কখনো? বরং আমাদের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে সব রকম সহায়তা দিয়েও এমনকি সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েও যখন লেজ গুটিয়েও পালাতে হয়েছে সেই সব আমেরিকা ভুলে গেলেও আমরা ভুলিনি বরং শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা করে চলেছেন। স্যাংশনের হুমকি দাতাদের প্রতি আমার এই খোলা চিঠি।

ঢাকা – ২৮ মে ২০২৩
প্রধান সম্পাদক ও সিইও, দৈনিক পথে প্রান্তরে

সংবাদটি শেয়ার করুন