বুধবার, ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নোয়াখালীতে শুরু হচ্ছে হাশেম লোক উৎসব

লোকগীতির বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের লোকগীতি শিল্পী, আঞ্চলিক গানের সম্রাট অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২২ জানুয়ারি) নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে শুরু হচ্ছে দু’দিনের ‘হাশেম লোক উৎসব-২০২৪’।

মোহাম্মদ হাসেম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সোমবার বিকেল ৪টায় নোয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।

হাশেম লোক উৎসব-২০২৪ উপলক্ষ্যে ‘লোকগীতির জাদুকর মোহাম্মদ হাশেম’ শিরোনামে স্মরণিকা প্রকাশিত হবে।

নোয়াখালীর প্রধান সংগীতখ্যাত ‘আঙ্গো বাড়ি নোয়াখালী রয়্যাল ডিস্ট্রিক ভাই/হেনী মাইজদী চৌমুহনীর নাম কে হুনে নাই’সহ হাজারো গানের গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী মোহাম্মদ হাশেমের জন্ম ১৯৪৭ সালের ১০ জানুয়ারি।

নোয়াখালী সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে তার বাড়ি। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৭০ সালে রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান সংগঠক হিসেবে তার পেশাজীবন শুরু করেন।

পর্যায়ক্রমে ঢাকা সংগীত কলেজ, কবিরহাট সরকারি কলেজ, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজসহ দেশের বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতার পর তিনি ২০০৫ সালে নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে অবসর নেন।

২০০৫ সালে অমর একুশে বইমেলায় উৎস প্রকাশন বের করে মোহাম্মদ হাশেমের গানের প্রথম সংকলন ‘নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান’। এরপর ২০১৫ সালে মোহাম্মদ হাশেমের রচিত বাছাই করা আড়াইশ গান নিয়ে উৎস প্রকাশনা বের করে ‘নির্বাচিত নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান’।

মোহাম্মদ হাশেম ২০২০ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর বড় দিঘির পাড়ের কোর্ট মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের লেখা গান চর্চা ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০২০ সালে যাত্রা শুরু করে মোহাম্মদ হাশেম ফাউন্ডেশন। জেলা শহরে চার বছর ধরে মোহাম্মদ হাশেমের জন্মদিন উদযাপনে হাশেম উৎসব আয়োজন করে আসছে এই ফাউন্ডেশন। ২০২২ সাল থেকে প্রবর্তন হয় মোহাম্মদ হাশেম পদক।

গেল বছর মোহাম্মদ হাশেম পদক-২০২৩ পেয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কিৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের যন্ত্রশিল্পী গৌরাঙ্গ চন্দ্র সরকার। ২০২২ সালে একই পদক পান বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক হাসান মতিউর রহমান এবং বাংলাদেশ বেতারের সাবেক মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল। এছাড়াও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ জনকল্যাণে বিশেষ অবদানের জন্য মোহাম্মদ হাশেম ফাউন্ডেশনের জুরিবোর্ড মনোনীত ১৩ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ হাশেম ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুস্তফা মনওয়ার সুজন জানান, এবারের উৎসবে শিক্ষা ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য মোহাম্মদ হাশেম পদক-২০২৪ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. দিদার-উল-আলম। এছাড়াও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ জনকল্যাণে বিশেষ ভূমিকার জন্য হাশেম লোক উৎসব-২০২৪ সম্মাননা দেওয়া হবে দুজনকে।

২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার উৎসব শেষ হবে। এদিন বিকেল ৫টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে মোহাম্মদ হাশেম পদক ও সম্মাননা প্রদান করা হবে। এর আগে বিকেল ৪টায় একই মঞ্চে ‘লোকগীতির জাদুকর মোহাম্মদ হাশেম’ শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে শুরু হবে সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। রাত ১০টায় কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ প্রদান করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ