স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল। এটি তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে দলটি। সকাল ৮টায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হবে জাতীয় পার্টি ও বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল মিলনায়তনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হবে। বিকেল ৩টায় স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল হবে। স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করবেন পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। সভা শেষে বিকেলে দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
রাজধানীর শ্যামপুর জুরাইন রেলগেটে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন জিএম কাদের। পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ শীর্ষ নেতারা। অনুষ্ঠান শেষে ৩ হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
২০১৯ সালের এই দিনে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এরশাদ। আদি নিবাস রংপুরেই দাফন করা হয়েছে। রংপুরে এরশাদের কবর জিয়ারতও করা হবে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসে। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এরশাদ। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। ১৯৯১ সালে এরশাদ গ্রেফতার হন। ১৯৯১ সালে জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও এরশাদ সংসদে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে বিজয়ী হয়। এরপর দশম ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি চলতি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন।