স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আনন্দপুর মৌজায় শেখ কামাল তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টারের নামে জেলা প্রশাসনের হস্তান্তর করা খাসভূমি পরিদর্শন করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শুক্রবার সকালে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন সৃজনশীল প্রকল্প ও উদ্যোগের ফলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মেধাভিত্তিক সাশ্রয়ী ও উন্নত দেশে পরিণত হবে।’ সাত দশমিক ১২ একর খাসভূমি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেন, ‘সরকারের গৃহীত শেখ কামাল তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প যখন বাস্তবায়ন হবে, তখন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। হবিগঞ্জে প্রকল্পের জন্য যে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানেই দ্রুত এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এ প্রকল্পে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে উপকৃত হবে হবিগঞ্জবাসী।’
পলক আরও বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে তথ্য ও প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে স্বক্ষম হয়েছি। শেখ কামাল তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার, শেখ রাসেল ডিজিটাল সেন্টার ও হাইটেক পার্ক প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা দেশকে প্রযুক্তি শিক্ষায় এক ধাপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ২০২৫ সাল নাগাদ আইসিটি খাত থেকে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। বর্তমানে দেশে ৩০০ স্কুল অব ফিউচার ও আট হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আরও ২৭ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং ৩০০ স্কুলস অব ফিউচার স্থাপন করা হবে।’
শেখ কামাল তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টারের স্থান পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজরাতুল নাইম ও সহকারী কমিশনার ভূমি ইয়াসিন আরাফাত রানা প্রমুখ।
এরআগে জীবনমুখী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানান পলক। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে জীবনমুখী শিক্ষার বেশি প্রয়োজন। জীবনমুখী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে ২০১৬ সালে ইনোভেশন ডিজাইন এন্টারপ্রেনিয়ারশিপ একাডেমির (আইডিয়া) কার্যক্রম শুরু করে। এ একাডেমি থেকে সফট স্কিল প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন স্বল্প শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই) কর্তৃক আয়োজিত অল অ্যাবাউট সফট স্কিল ট্রেনিং সিরিজ গ্রাজুয়েশন সিরিমনি-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই-কমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
উই-এর প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আলতাফ হোসাইন, উই গ্লোবাল অ্যাডভাইজার সৌম্য বসু। প্রতিমন্ত্রী উই-কে বাংলাদেশের অনন্য মডেল উল্লেখ করে বলেন, নারী উদ্যোক্তারা এ ধরনের উদ্ভাবন দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, সাশ্রয়ী, বুদ্ধিদীপ্ত, উদ্ভাবনী ও উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং প্রযুক্তিনির্ভর প্রজন্ম গড়ে তুলতে নারী উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পলক বলেন, স্বাধীনতার অকৃত্রিম বন্ধু ভারত ও উই-এর মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক নারী অল অ্যাবাউট সফট স্কিলের মতো পদক্ষেপ নিয়ে উদ্ভাবনী ও উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করছে। তাই আমরাও তাদের পাশে আছি। দেশের প্রত্যেকটি হাইটেক পার্কে তাদের জন্য একটি ডেটিকেটেড ওয়ার্কিং স্পেস ও সিড মানির ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে আগামী ৮ আগস্ট উই-এর ৩০০ নারীকে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান। প্রতিমন্ত্রী উই মাস্টার ক্লাসে অংশগ্রহণকারী ১৪ জনকে ‘অল অ্যাবাউট সফট স্কিল’ উপস্থাপনা পরিবেশন করেন। এরপর অতিথিদের সম্মাননা স্মারক দেওয়ার পর ৩৫০ জন মাস্টার গ্রাজুয়েটের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়। পরে তিনি উইমেন ই-কমার্স এন্টারপ্রেনিয়ারশিপ সামিটের ডিজিটাল নিবন্ধনের উদ্বোধন করেন।