স্টাফ রিপোর্টার – ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর আলোকে সামরিক শক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় শেখ হাসিনা সেনানিবাসে ৭ পদতিক ডিভিশনের অধীনে ৪টি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধান ও দেশমাতৃকা রক্ষায় সেনাবাহিনীর সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আধুনিক সরঞ্জাম মোতায়েনের মাধ্যমে আমরা জাতিসংঘ ও বিশ্ববাসীর কাছে আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। এভাবে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক সময় বিশ্বের অন্যতম সেনাবাহিনীতে রূপান্তরিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এদেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের প্রতীক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশ গঠন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে।
সেনাপ্রধান বলেন, এভাবে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একসময় বিশ্বের অন্যতম সেনাবাহিনীতে রূপান্তরিত হবে। এ বাহিনী এ দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের প্রতীক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের সেনাবাহিনী পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশ গঠন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। এর প্রতিটি সদস্যকে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
শেখ হাসিনা সেনানিবাসে নবগঠিত ইউনিটগুলো হলো- ৫২ স্বতন্ত্র এমএলআরএস ব্যাটারি আর্টিলারি, ৩৫ বীর, ১৬৩ ফিল্ড ওয়ার্কশপ কোম্পানি এবং ৮৫ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স। অনুষ্ঠানে প্যারেড কমান্ডার মেজর মো. রেজোয়ানুল হাফিজ চন্দনের নেতৃত্বে প্যারেড দল সালাম প্রদান করেন। এ সময় ৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বরিশাল পটুয়াখালীর মধ্যবর্তী পায়রা নদীর তীরে বরিশাল শেখ হাসিনা সেনানিবাস প্রতিষ্ঠিত হয়।
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহতি উদ্যোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে আধুনিকায়ন হচ্ছে। মহতী এসব উদ্যোগের জন্য তিনি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
সেনাপ্রধান এ সময় গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং শ্রদ্ধা জানান, অগণিত বীর শহীদ ও সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের— যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে কাঙ্খিত স্বাধীনতা। তিনি জানান, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সেই উন্নয়নের পথ ধরে আজকের এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠিত হলো। একই সঙ্গে বাস্তবায়িত হলো সামরিক বাহিনীর উন্নয়নের রূপকল্প ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ এর আরেকটি ধাপ।
জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার বরিশাল এরিয়া মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. মোশফেকুর রহমান এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ১৯ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার ঘাটাইল এরিয়া মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী, নবগঠিত ইউনিটগুলোর পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান ৭ পদাতিক ডিভিশনের একটি প্রশিক্ষণ মাঠে উপস্থিত সব পদবীর সেনা কর্মকর্তা, জেসিও ও অন্যান্য পদবীর সেনা সদস্যদের উদ্দেশে দরবার নেন এবং মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, অসামরিক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পদবীর সেনাসদস্য উপস্থিত ছিলেন।