স্টাফ রিপোর্টার – কানাডার আশ্রয়ের থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এইচএমবি নূর চৌধুরীকে প্রচলিত আইনে ফেরত দেওয়া সম্ভব নয় বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছেন দেশটির হাইকমিশনার লিলি নিকোলস। অপরদিকে নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে কানাডাকে বিকল্প পথ খুঁজতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কানাডার আইনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ফেরত দেওয়া সম্ভব নয় বলে আমাকে হাইকমিশনার জানিয়েছেন।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আমি তাদের অনুরোধ করেছি, বিকল্প পন্থা বের করা যায় কি না। তাকে বলেছি, একজন খুনিকে আশ্রয় দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন। হাইকমিশনার আমাদের এ কথা তার দেশের সরকারকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, কানাডীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে আমাদের দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সরকার নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের মধ্যে পাঁচজন এখনো পলাতক। ছয় খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর হলেও বিদেশে পালিয়ে থাকা ওই পাঁচজনকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের নিজস্ব আইন পলাতকদের ফেরানোর ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এসব ঘাতক এখনো অধরাই রয়ে গেছে। তবে এদের ফিরেয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি (ইন্টারপোল) শাখার মাধ্যমে পাঁচ খুনির বিষয়ে রেড নোটিশ জারি রয়েছে। ইতোমধ্যে রেড নোটিশের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ও আত্মগোপনে থাকা পাঁচ খুনি হচ্ছে লে. কর্নেল এসএইচএমবি নূর চৌধুরী (অব্যাহতি), লে. কর্নেল এএম রাশেদ চৌধুরী (অব্যাহতি), লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম (অব্যাহতি), লে. কর্নেল আবদুর রশিদ (বরখাস্ত) ও রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেহ উদ্দিন। এনসিবির তথ্যানুযায়ী এখন নূর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে। অন্য তিনজনের অবস্থান পুরোপুরি নিশ্চিত না হলেও শরিফুল হক ডালিমের সম্ভাব্য অবস্থান পাকিস্তান অথবা লিবিয়ায়, আবদুর রশিদ লিবিয়া অথবা জিম্বাবুয়েতে এবং মোসলেহ উদ্দিনের সম্ভাব্য অবস্থান ভারতে। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনাসংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বিশেষ টাস্কফোর্সের প্রধান আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার বিষয়ে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।