স্টাফ রিপোর্টার – তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির অনেক নেতাই নির্বাচনে যেতে উদগ্রীব। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে দলটির নেতাদের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে এমন মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী। রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সঙ্গে কপ-২৭ পূর্ব মতবিনিময় ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তরকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন যে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। তারা নির্বাচনের বহু আগে থেকে নির্বাচনে যাবো না, সরকারে অধীনে নির্বাচনে যাবো না বলে এসেছিল। পরে জল ঘোলা করে খেয়েছে। নির্বাচনে গিয়েছে। এবারও তারা বলছে যাবে না। বিএনপির অনেক নেতাকে আমি জানি, শুনি, তারা নির্বাচনে যেতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। মির্জা আলমগীর যাই বলুন, বিএনপি নেতারা উদগ্রীব হয়েই বসে আছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় জেলের বাইরে আছেন বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় জেলখানার বাইরে আছেন। এ ধরনের ঘটনা আমাদের দেশের ইতিহাসে বিরল। কিন্তু কেউ যদি এর মূল্য না বোঝে, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশোভন-অশালীন বক্তব্য দেয় এবং এটাকে দুর্বলতা মনে করে সেক্ষেত্রে বদান্যতা দেখানোর প্রয়োজন আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না।
ড. হাছান বলেন, তারা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। আপনারা জানেন বরিশালেও তারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। যুবলীগের ওপর হামলা করেছে, দেশের অন্যান্য জায়গায়ও তারা এ চেষ্টা করছে। সে প্রেক্ষাপটে সরকার বসে থাকতে পারে না। সরকারের দায়িত্ব জীবনে শান্তি-স্থীতিশীলতা স্থাপন করা। কারও জেলের বাইরে থাকার সুবাদে তার পরামর্শ নিয়ে যখন দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হয় তখন তো কারও প্রতি বদান্যতা দেখানোর প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ ও জনগণের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ অবিচল। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। সমস্ত রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে অকুতোভয়ে কাজ করে আসছে। আমরা আপস করি না, আপস জানি না। দেশের প্রশ্নে, জনগণের প্রশ্নে, রাষ্ট্রের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সবসময় অবিচল।
বিএনপি নেতাদের মন্তব্য ‘আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাবে’-এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, পালানোর ইতিহাস তো বিএনপির। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশ চলে গেছেন যে, তিনি আর রাজনীতি করবেন না এবং তার সাথে আরো অনেকেই পালিয়ে গেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আজ শুধু সরকারে নয়, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষকসহ দেশের সবপেশার মানুষের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আগের তুলনায় অনেক গভীরে প্রোথিত হয়েছে। সে কারণেই বিএনপির গাত্রদাহ, কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। যে দলের মহাসচিব বলে পাকিস্তান আমলই ভালো ছিল, তারা কোন চেতনায় বিশ্বাস করে, তা সহজেই অনুমেয়। তারা আসলে পাকিস্তানের পক্ষে।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, সরকার ও জনগণের সম্পত্তি ধ্বংস করা থেকে বিএনপি যদি বিরত থাকে, তাহলে তাদের সভা-সমাবেশ নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। সরকার এক্ষেত্রে তাদেরকে সহযোগিতা করছে এবং সেই কারণেই তারা সমাবেশ করতে পারছে। আর আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে হামলা করা হয়েছিল, ২৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।