Search
Close this search box.
৩০ বছর পর আবার ইংল্যান্ড-পাকিস্তান শিরোপা লড়াই হবে

ভারতকে উড়িয়ে ইতিহাস গড়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড

ভারতকে উড়িয়ে ইতিহাস গড়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড

মিথুন আশরাফ – টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। অ্যালেক্স হেলস (৮৬*) ও জস বাটলারের (৮০*) রেকর্ড গড়া জুটিতে ভারতকে পাত্তাই দেয়নি ইংল্যান্ড। কোন বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রথমবারের মতো কোন দল ১০ উইকেটে জিতে। সেই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের জুটির (১৭০*) ইতিহাসও গড়েন জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস।

এই জয় পেয়ে প্রথম সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে ওঠা পাকিস্তানের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে লড়াই করবে ইংল্যান্ড। ৩০ বছর পর, সেই ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর আবার ইংল্যান্ড-পাকিস্তান কোন ফাইনালে লড়াই হবে। এ্যাডিলেড ওভালে ফাইনালে ওঠার ম্যাচে টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিং করতে পাঠায় ইংল্যান্ড। ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৬৮ রান করতে পারে ভারত। হার্দিক পান্ডিয়া (৬৩) ও বিরাট কোহলির (৫০) জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে এ রান করতে পারে ভারত। রোহিত শর্মা করেন ২৭ রান। ক্রিস জর্ডান বল হাতে ৩ উইকেট শিকার করেন।

জবাব দিতে নেমে কোন উইকেট না হারিয়ে ১৬ ওভারে ১৭০ রান করে জিতে ইংল্যান্ড। হেলস ৪৭ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় অপরাজিত ৮৬ ও বাটলার ৪৯ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৮০ রান করেন। দুইজন মিলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ অবিচ্ছিন্ন ১৭০ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ জেতান। এরআগে এ বিশ্বকাপেই সিডনিতে দ্বিতীয় উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার ডি কক ও রাইলি রুশো মিলে ১৬৮ রানের জুটি গড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছিলেন। হেলস ও বাটলার মিলে শুধু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এরআগে ওপেনিংয়ে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের সর্বোচ্চ অবিচ্ছিন্ন ১৫২ রানের জুটিই ভাঙেনি, সব জুটির রেকর্ডই ভেঙ্গে দিয়েছেন। আর বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উইকেটের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় জয়টিও হয়ে যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৭ উইকেটে জয়টিই সবচেয়ে বড় জয়। অনেকগুলো ৭ উইকেটের জয় আছে। কিন্তু প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ১০ উইকেটের জয়ের দেখা মিলল। ওয়ানডে বিশ্বকাপেও কখনও কোন দল সেমিফাইনালে ১০ উইকেটে জিততে পারেনি। তাতে করে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডই উইকেটের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় জয়টি পেয়ে ইতিহাস গড়েছে।

ভারত শুরুতেই বিপাকে পড়ে। কষ্ট করে রান তুলতে হয়। কিন্তু চার হাজার রান পূর্ণ করা কোহলি উইকেট আকড়ে থাকেন। চতুর্থ উইকেটে কোহলি ও পান্ডিয়া মিলে দলকে নিরাপদে নেওয়ার চেষ্টা করেন। দুইজন মিলে ৬১ রানের জুটি গড়েন। এই জুটিতেই আসলে ১৭০ রানের কাছে যেতে পারে ভারত। কোহলি ৪০ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ রান করে আউট হন। তবে পান্ডিয়া শেষ বলে গিয়ে আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ধুমধারাক্কা ব্যাটিং করে ৬৩ রান করেন। দলকেও বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান।

ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস মিলে এতটাই সহজে ব্যাটিং করতে থাকেন, ৫ ওভার শেষ হওয়ার আগেই স্কোরে ৫০ রান যোগ করে ফেলেন। হেলসতো ২৮ বলেই হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন। দুইজন মিলে ১১তম ওভারেই দলের স্কোরে ১০০ রান যোগ করে ফেলেন। ছক্কা চার হাকাতে থাকেন। হেলসতো বিধ্বংসী ব্যাটিং করতে থাকেন। বাটলারও কম নন। ৩৬ বলে হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন বাটলার। শেষপর্যন্ত ৪ ওভার বাকি থাকতে এই দুইজন ম্যাচ জেতান। ১৭০ রান করে জয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়েন বাটলার ও হেলস। ভারতকে নাকানিচুবানি খাওয়ান এ দুই ওপেনার।

সেই ১৯৮৭ সালে, ৩৫ বছর আগে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার সর্বশেষ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে লড়াই হয়েছিল। সেটি ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপে। দীর্ঘ এত বছর পর, মাঝপথে ৮টি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ৭টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হয়। কিন্তু ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে লড়াই হয়নি। এবার আবার লড়াই হয়। সর্বশেষ সেমিফাইনাল লড়াইয়ে যেমন হেরেছিল ভারত। এবারও হারে।

ভারতকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার টিকেট পায় ইংল্যান্ড। এরআগে ২০১০ সালে ফাইনালে উঠে জিতে শিরোপাও জয় করে। এরপর ২০১৬ সালের ফাইনালে উঠে রানার্সআপ হয়। এবার তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে খেলবে ইংল্যান্ড।

পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড ফাইনালে লড়াই করবে। এরআগে দুই দল ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালের বিশ^কাপে ফাইনালে মুখোমুখি হয়। ১৯৮৭ সালে ইংল্যান্ড জিতে। ১৯৯২ সালে জিতে পাকিস্তান। দুই দলই টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে দুইবার ফাইনালে খেলে। একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়। একবার করে হয় রানার্সআপ। এবার যে দলই চ্যাম্পিয়ন হোক, দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা উচিয়ে ধরবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ