স্টাফ রিপোর্টার – জাতীয় সংসদকে একদলীয় ক্লাবে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমনটি বলেছেন। সঙ্গে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ৭২ থেকে ৭৫ এর কথা বললেই আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা করে ওঠে কেন? কী হয়েছিল তখন? তা বলে না কেন আওয়ামী লীগ? সোমবার রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মহাসচিব। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ‘বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা ও তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, ৫০ বছর পরও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের আত্মাকেই আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। সংসদের মতো রাষ্ট্রের সব মৌলিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি হতাশ নয়, বিএনপি পদে পদে সফল হচ্ছে। এই সফলতার কারণ হচ্ছে লড়াইটা শুধু বিএনপির নয়, জনগণের। বিএনপি লড়াই অসম শক্তির বিরুদ্ধে। যাদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, অস্ত্র, গোলা বারুদ। তোমার ভোট আমি দেবে, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র। অধিকার আদায়ে জনগণ কখনো আপোষ করেনি, করবেও না বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, কেন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল? কেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ নেওয়া হয়েছিল? কেন সেদিন আওয়ামী লীগ থেকে জাসদ তৈরি হলো? আওয়ামী লীগ এগুলোর উত্তর দেয় না।
ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল কথা ছিল বাংলাদেশ একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ হবে, সাম্য, ন্যায় বিচার, মানবিক মর্যাদা নিয়ে এ দেশ পরিচালিত হবে। সেটাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বুকের রক্ত দিতে হচ্ছে, রাস্তায় নামতে হচ্ছে গণতন্ত্র; আমার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমি স্বাধীনভাবে কথা বলতে চাই, আমার ভোট আমি দিতে চাই। আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান তারা ধ্বংস করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না। আমরা একটি অসম লড়াইয়ের মধ্যে আছি। আমাদের প্রতিপক্ষ প্রবল প্রতাপশালী, তাদের হাতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র, পিস্তল, গ্রেনেড—অবলীলায় তারা সেগুলো মারে এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে, মানুষকে বাঁচাতে হবে, আমাদের রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারকে ১০ দফা দাবি মেনে নিতে হবে এবং তার জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সঙ্গে যেন জনগণ আন্দোলন করে সেজন্যই আমরা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য রুপরেখা দিয়েছি এবং মানুষ এটা সাদরে গ্রহণ করেছে। অসম লড়াই করছি আমরা। আমাদের প্রতিপক্ষ প্রবল শক্তিশালী, তার জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে, তবে জনগণের উত্তাল তরঙ্গে তারা ভেসে যাবে। আমাদের সংস্কৃতি, চিন্তা-চেতনার বিরোধী কোন কিছুই পাঠ্যপুস্তকে স্থান পাওয়া ঠিক না বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন আপনারা কেউ ইস্যু তৈরি করবেন না; আমরা সংশোধনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকের অসংযুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে। ইস্যু তো আমরা তৈরি করছি না, বরং আপনারা (সরকার) ইস্যু তৈরি করছেন।