স্টাফ রিপোর্টার – ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, কালশী ফ্লাইওভার মিরপুরবাসীর জন্য বসন্তের উপহার। ফ্লাইওভারটি চালুর পর প্রতিদিনের যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে মিরপুরের বাসিন্দারা। কালশী ফ্লাইওভার চালু হলে মিরপুরবাসী যান ও জলজটমুক্ত হবে। রবিবার ফ্লাইওভার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে কালশী বালুর মাঠের জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি।
মেয়র আতিক বলেন, ফ্লাইওভারের নিচে ফুটপাত ও সাইকেল লেন করা হয়েছে। দুটি ফুটওভার ব্রিজও করা হয়েছে।
এরআগে তিনি বলেছিলেন, উদ্বোধনের পর সেটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী কালশী এসে একটি জনসভা করবেন ও ফ্লাইওভার উদ্বোধন করবেন। মিরপুরে এরই মধ্যে মেট্রোরেল চালু হয়েছে। কালশী ফ্লাইওভার যুক্ত হলে ওই এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। মিরপুরের মানুষের জন্য একটা আশীর্বাদ।
মেয়র বলেন, মিরপুরের মানুষের একটা দাবি ছিল কালশী ফ্লাইওভার। বিমানবন্দর সড়ক থেকে মিরপুর এলাকায় ঢোকার একটা প্রবেশপথ কালশী সড়ক। তবে ওই এলাকায় সব সময় যানজট লেগে থাকত। যানজটের ভয়ে ১০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে মিরপুর যেতে হতো। ফ্লাইওভারের নির্মাণ হওয়ায় আর তা করতে হবে না। ফ্লাইওভার এলাকায় দুটি ফুট ব্রিজ করা হয়েছে, তাতে থাকবে চলন্ত সিঁড়ি। সাইকেলের জন্য আলাদা লেন রয়েছে।
ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী মোড়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পায় ২০১৮ সালের ০৯ জানুয়ারি। প্রকল্পের আওতায় ইসিবি চত্বর থেকে কালশী পর্যন্ত তিন দশমিক ৭০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। কালশী মোড়ে হয়েছে দুই দশমিক ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার। চার লেনের ফ্লাইওভারে র্যাম্প তিনটি।
ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ও মিরপুর ডিওএইচএসমুখী মূল ফ্লাইওভারটি চার লেনের। কালশী মোড় থেকে কালশী সড়কের দিকে নেমেছে দুই লেনের একটি র্যাম্প। মিরপুর ডিওএইচএস প্রান্ত ও ইসিবি চত্বরের দিকের প্রান্ত থেকে ফ্লাইওভারে ওঠা যাবে। কালশী রোড প্রান্ত দিয়ে নামার সুযোগ রয়েছে, ওঠা যাবে না।
প্রকল্পের আওতায় দুটি ফুট ব্রিজ নির্মাণ, একটি পিসি গার্ডার ব্রিজ সম্প্রসারণ, একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, দুটি পুলিশ বক্স, সাত দশমিক ৪০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন ও সসার ড্রেন নির্মাণ, এক দশমিক ৭৬ কিলোমিটার পাইপ ড্রেন নির্মাণ, সাইকেলের জন্য আলাদা লেন ও ছয়টি বাস বে এবং যাত্রী ছাউনি করা হয়েছে।
মূল ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৩৩৫ মিটার। ৪৭৫ মিটারের র্যাম্প রয়েছে পাঁচটি। ৬৮টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ উড়ালসড়কের গার্ডার সংখ্যা ১৭টি। ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে সমান তালে চলতে তৈরি হয়েছে সড়ক। ৩৭.২ মিটার প্রস্থ ও প্রায় চার কিলোমিটারের এ সড়ক চালুর কারণে যানজট অনেক কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, ফ্লাইওভারটি চালু হলে কয়েক কোটি মানুষের ব্যস্ত নগরীর মিরপুরের সঙ্গে বিমানবন্দর, উত্তরা, অন্যদিকে বাড্ডা, বনানী ও মহাখালীর সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। ইসিবি চত্বর থেকে সরাসরি এ উড়ালপথ ধরে চলে যাওয়া যাবে পল্লবী কিংবা মিরপুরে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলাকাভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানের এমন উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে পুরো নগরীর যানজট সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।