স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর ডেমরা এলাকায় একটি চার তলা ভবনকে টার্গেট করে ডিশ লাইনের সংযোগের তার কেটে মেকানিক পরিচয়ে একাধিকবার বাসায় ঢুকে রেকি করে ডাকাত চক্রের সদস্যরা। এরপর অস্ত্র ভাড়ায় এনে ভবন মালিক নিলুফা ইয়াসমিনের বাড়িটিতে ঢোকার চেষ্টা করে ডাকাতরা।
সোমবার (৮ মে) ডাকাত সর্দার উজ্জ্বল তার চার সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশি পিস্তলসহ ওই বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করে। বিষয়টি স্থানীয় সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে র্যাব-৩ এর সদস্যরা। এসময় ডাকাত দলনেতা মো. উজ্জ্বল হোসেন ও তার এক সহযোগী রাশেদকে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাব।
মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ঢাকার ডেমরা থানার বাঁশেরপুল এলাকার টার্গেট করা বাড়ির সামনে একদল ডাকাত অবস্থান করছে, এমন গোয়েন্দা তথ্য পায় র্যাব-৩ এর সদস্যরা। এরপর সেখানে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি তিন জন পালিয়ে যায়।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, ডাকাত দলের সর্দার উজ্জ্বল হোসেন পুরো দলটি পরিচালনা করে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে উজ্জ্বলের নেতৃত্বে তার দলটি দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল। তার দলের সদস্য সংখা ১০ জন। রাজধানীর ডেমরা, শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বড় ধরনের ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে তারা। গত পাঁচ মাসে নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাতটি ডাকাতি করেছে দলটি। আরও আট থেকে ১০টি বড় ধরনের ডাকাতির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ডাকাত সর্দার উজ্জ্বল তার দলের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতো এবং ডাকাতির জন্য রেকি করতো। পরবর্তীতে উজ্জ্বল দলের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে টার্গেট করা বাড়িগুলোতে ডাকাতির জন্য পরিকল্পনা করে বিদেশি পিস্তল, বিদেশি রিভলভার, বিস্ফোরক জাতীয় সরঞ্জাম এবং বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালাতো।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত উজ্জ্বল হোসেন মূলত ব্যানার, বিলবোর্ড তৈরির ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেসের দোকানে কাজ করে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে মামার স্টিলের আসবাবপত্র তৈরির কারখানায় দীর্ঘ পাঁচ বছর কাজ করে সে। সেখান থেকে পালিয়ে ছন্নছাড়া জীবনযাপন শুরু করে। তখন থেকে উজ্জ্বল ছিনতাই, চুরি, মাদকাসক্তির মতো বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
একসময় সে অবৈধভাবে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশে ডাকাত চক্র গড়ে তোলে এবং দীর্ঘদিন ধরে এই ডাকাত চক্রটি নিজে নেতৃত্ব দিয়ে পরিচালনা করে আসছিল। তার নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতার রাশেদ ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। সে মূলত রং মিস্ত্রির কাজ করে এবং কাজের অজুহাতে বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে ডাকাতির রেকি করতো।