রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটির আসামবস্তি টু কাপ্তাই সংযোগ সড়কের ১৮ কিলোমিটার এলাকায় তিন হাজার দেশী ও বিদেশী ফুল, ফল, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) সকালে ‘আই লাভ রাঙ্গামাটি’ ট্যুরিস্ট পয়েন্টে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাঙ্গামাটি ও বন বিভাগ, রাঙ্গামাটি অঞ্চল যৌথভাবে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করে।
চারা গাছের মধ্যে রয়েছে- পাকুর, অশ্বথ, বট, হিজল, রক্তকরবী, গর্জন, নাগলিঙ্গম, অর্জুন, বহেরার মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ, রয়েছে তাল, বুদ্ধ নারকেল, নারকেলের মতো উপকারী বৃক্ষ, রয়েছে জারুল, বকফুল, সোনালু, আমলকী, লাল সোনাইল, কাঠবাদামের মতো শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ। আরো রয়েছে ট্যাবুবুইয়া, জাকারান্ডা, গোন্তাভিয়া, রুদ্রাক্ষ, হলুদ ক্যাশিয়া, ক্যামেলিয়া, হ্যামেলিয়া, উইস্টেরিয়ার মতো শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষ হিসেবে পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত বিদেশি বৃক্ষ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পার্বত্য রাঙ্গামাটি-২৯৯ আসনের মাননীয় সাংসদ জনাব দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মানীত চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব সুপ্রদীপ চাকমা, ৩০৫ পদাতি বিগ্রেড রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার জনাব সোহেল আহমেদ, জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এবং পুলিশ সুপার জনাব মীর আবু তৌহিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার বলেন, “নান্দনিক এ সড়কে যত্রতত্র রিসোর্ট স্থাপন করে সড়কের সৌন্দর্য নষ্ট করা যাবেনা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, রাঙ্গামাটি দক্ষিণ মো. জাহেদুর রহমান মিয়া বলেন, দুই দিকে জলাভূমি আর মাঝখানে রাস্তা থাকায় এ সংযোগ সড়কটি ‘ইকো-টোন’ নামীয় একটি ভৌগোলিক আকৃতিতে অবস্থান করছে। তাই এ রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার প্রতি আমাদের আরো মনোযোগী হতে হবে”।
বিশেষ অতিথি জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “এমন একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি এবং ধন্যবাদ জানাই দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বনবিভাগের প্রতি; বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি। উনারা নিজেরা সম্পৃক্ত হয়ে এ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন এবং আমাকেও সম্পৃক্ত করেছেন”।
রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার সোহেল আহমেদ বলেন, “খুবই চমৎকার উদ্যোগ। রোপণের পর পরিচর্যা করাও জরুরী। আমি ব্যক্তিগতভাবে এসকল রোপণকৃত চারার নিয়মিত খোঁজ-খবর নিব”।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, “এ ধরনের চর্চা শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে”। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার জনাব মীর আবু তৌহিদ, বিপিএম বলেন, “এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি”।
ট্যুরিস্ট পুলিশ রাঙ্গামাটি রিজিয়নের পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মহিউল ইসলাম বলেন, “নান্দনিক এ সড়কটিতে বড় কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনা। ফলে অনেক ট্যুরিস্ট বড় বাস কিংবা কোস্টার নিয়ে এ সড়কে প্রবেশ করতে পারেনা। তাই এ সড়কটি প্রশস্তকরণের প্রস্তাব করছি”।
এলজিইডি, রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব আহমদ শফি বলেন, “একদিকে পাহাড় এবং একদিকে জলাভূমি আর তার মাঝে আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ; এমন সৌন্দর্যের কারণে অনেক দেশি ও বিদেশী বিনিয়োগকারী এ সংযোগ সড়কে রিসোর্ট নির্মাণে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন”।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি ডিজিএফআই এর কর্নেল জিএস মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম; এএসইউ, রাঙ্গামাটির কমান্ডার লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ আল মামুন সুমন; ট্যুরিস্ট পুলিশ রাঙ্গামাটি রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ মহিউল ইসলাম; সিভিল সার্জন ডাঃ নূয়েন খীসা; এনএসআই রাঙ্গামাটির যুগ্মপরিচালক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন; বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ; সড়ক ও জনপথ বিভাগ, রাঙ্গামাটি সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জনাব মোফাজ্জল হায়দার এবং এলজিইডি, রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব আহমেদ শফি, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী এবং বন বিভাগ, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাগণ। এছাড়া রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ; স্কাউটস-রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইডস ও সততা সংঘের সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।