স্টাফ রিপোর্টার: দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করতে সবার সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনজিওর প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এখনই সমন্বিতভাবে স্বাস্থ্য ও খাদ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সমন্বয় করে ত্রাণ পাঠাতে হবে। তাছাড়া, বন্যা কবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ দ্রুত পুন:স্থাপনে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, যেভাবে দেশের মানুষ এগিয়ে এসেছে তাতে আমি অভিভূত। সমন্বিতভাবে স্বাস্থ্য ও খাদ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ফান্ড মোভিলাইজ করতে হবে। এ সময় তরুণদের উদ্যোগের সাথে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
বৈঠকে এনজিওর প্রতিনিধিরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জোন হিসেবে ভাগ করে কাজ করার পরামর্শ দেন। তাছাড়া, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর দাতা সংস্থা ও প্রবাসীদের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে সমন্বিতভাবে কাজ করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:দেশে বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের
এদিকে শনিবার (২৪ আগস্ট) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেয়া সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা রাজ্যে বৃষ্টি কমে এসেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে এলাকাগুলোর ছয়টি নদীর নয়টি স্টেশনের পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকার নদীর পাঁচটি স্টেশনে এখন পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। উজানের নদ-নদীর পানি কমে যাচ্ছে। ফলে এখন মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে উন্নতি হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উজানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীগুলোর কাছের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ছয় নদীর নয়টি স্টেশনে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেগুলো হলো অমরশীদ (কুশিয়ারা নদী) ১৪ সেন্টিমিটার, শেওলা (কুশিয়ারা) ১, শেরপুর-সিলেট (কুশিয়ারা) ৯, মারকুলী (কুশিয়ারা) ৪, মৌলভীবাজার (মনু) ৯১, বাল্লা (খোয়াই) ৪৪, কুমিল্লা (গোমতী) ৯৬। এ ছাড়া রামগড় (ফেনী) ও পরশুরাম (মুহুরী) যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে হবিগঞ্জ (খোয়াই), মনু রেলওয়ে ব্রিজ (মনু), দেবিদ্বার (গোমতী), নারায়ণহাট (হালদা) ও পাঁচপুকুরিয়া (হালদা) স্টেশনের পানি।