স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী সরকারের এমন পতনের পর শেখ হাসিনাসহ তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গুম, খুন, গণহত্যা, অর্থপাচার, জমি দখল, বিডিআর বিদ্রোহসহ অসংখ্য অভিযোগ গণমাধ্যমে উঠে আসছে। আর এসব ঘটনায় তাদের নামে বিভিন্ন থানায় হচ্ছে মামলা। বিশেষ করে কোটা আন্দোলন ঘিরে অন্তত সাড়ে ৬০০ মানুষকে হত্যা, বিডিআর বিদ্রোহ ও গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একের পর এক হত্যা মামলা হচ্ছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার দলের এমপি-মন্ত্রী, পুলিশ ও র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও আসামি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১৩ আগস্ট প্রথম রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা হয়। এরপর এখন পর্যন্ত (২৪ আগস্ট দুপুর) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৭৪টি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও মামলা হয়েছে।
হত্যা মামলাগুলো মধ্যে ১৩ আগস্ট একটি, ১৪ আগস্ট একটি, ১৫ আগস্ট তিনটি, ১৬ আগস্ট ঢাকা ও বগুড়ায় পৃথক দুটি, ১৭ আগস্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক তিনটি, ১৮ আগস্ট ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আটটি, ১৯ আগস্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামে চারটি, ২০ আগস্ট ঢাকা, বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জে দশটি, ২১ আগস্ট ঢাকায় পাঁচটিসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও ফতুল্লা, আশুলিয়া ও চট্টগ্রামে দশটি, ২২ আগস্ট ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দশটি, ২৩ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে আরও ১৪টি এবং ২৫ আগস্ট বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাসহ দুটি হামলা হয়েছে।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সাতটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। কেউ কেউ দেশ ছাড়তে পারলেও অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এরমেধ্য গত ১৩ আগস্ট প্রথমে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর একে একে সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্মেদ পলক, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, একাত্তর টিভির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক-উপস্থাপক ফারজানা রূপা, ১৪-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক এমপি সাদেক খান এবং সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।