Search
Close this search box.

যুদ্ধ উসকানিদাতা দেশের তালিকায় শীর্ষে যারা

পথে প্রান্তরে ডেস্ক: স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের যুদ্ধ, জাতিতে জাতিতে দ্বন্দ্ব, ধর্মীয় দাঙ্গায় বলি হচ্ছে মানুষ নিজেই। রাষ্ট্রনায়ক, সেনাপতি এবং তারকা খচিত জেনারেল থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক বা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এমন সব হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। মতবাদের সঙ্গে ভিন্ন মতাবলম্বীর হানাহানিতে এই ধরনীর মাটি যুগে যুগে রঞ্জিত হয়েছে মানুষেরই এক এবং অভিন্ন লাল রক্তের ধারায়। পারিবারিক সহিংসতা, নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা, (সংঘবদ্ধ) ধর্ষণ এবং যৌন অনাচারের সঙ্গে সমান তালে মানুষ হত্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জমি সংক্রান্ত বিরোধ, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং মাদক।

প্রস্তর যুগের হাতিয়ার থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের আগ্নেয়াস্ত্র এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে ব্যাপকমাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছে। পাথরের হাতিয়ার, বল্লম, তলোয়ার, কামান-গোলা এসব কিছুকে সেকেলে বানিয়ে দিয়েছে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল একে ৪৭, স্নাইপার, পিস্তল, হ্যান্ডগান, লেজারসহ টমাহুক মিসাইল (ক্ষেপণাস্ত্র)সহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র।

সামরিক অস্ত্রকে আরও বেশি প্রাণঘাতী করে তোলায় উচ্চ পর্যায়ে গবেষণা এবং বিপুল পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ অব্যাহত রয়েছে। এসব গবেষণার সফল হচ্ছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি), দূরপাল্লার আন্ত:মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক বোমা (নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড), হাইড্রোজেন বোমা এবং ভয়ংকর রাসায়নিক বোমা।

এসব ভয়ংকর অস্ত্র ছাড়াও আরও লাখ লাখ ধরনের দেশিয় অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে মানুষ হত্যায়। আর দু-হাত, দু-পা ওয়ালা চৌকস মানুষই এসব ব্যবহার করেছে নিরস্ত্র কিংবা অস্ত্রধারী মানুষের ওপর। এযাবতকালে মানুষহত্যায় কোন প্রাণী গুলি চালিয়েছে এমনটি প্রথম সারির কোন গণমাধ্যমে এসেছে বলে মনে হয় না।

বিংশ শতাব্দিতে মাত্র বিশ বছরের ব্যবধানে দুটি বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে ৯ কোটির বেশি মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ গেছে প্রায় ৭ কোটি মানুষের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনের মানুষ। এছাড়া পোল্যান্ডের ৫৮ লাখ, জার্মানির ৪২ লাখ, জাপানের প্রায় ২ লাখ সামরিক এবং বেসামরিক মানুষ ওই যুদ্ধে নিহত হন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৮৫ লাখ সেনা গুলিবিদ্ধ, আহত কিংবা অসুস্থ হয়ে মারা যান। বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি।

ভিয়েতনাম, কোরিয়া, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, ইরাক-আফগানিস্তান, সিরিয়া, সুদান, নাইজেরিয়া, রুয়ান্ডা, বসনিয়ায় গণহত্যা, গৃহযুদ্ধ, স্বাধীনতা যুদ্ধ, পরাশক্তির আগ্রাসনসহ মনুষ্যসৃষ্ট সংঘাতে লাখ লাখ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন নারী-শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী এবং ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর মানুষ।

বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবাজ এবং উসকানিদাতা দেশগুলো নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দেখা যায় ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার উদ্বেগের কারণে তারা সংঘাতে জড়ায়। এসব সংঘাতে তাদের ভূমিকা জটিল এবং অনেকাংশে অস্পষ্ট থাকে। এই দেশগুলো সামরিক হস্তক্ষেপ, প্রক্সি যুদ্ধ (ছায়াযুদ্ধ), বা উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়ার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত যায়। বেশ কিছু দেশ রয়েছে যাদের প্রায়শই এই ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যদিও এসব দেশের ক্ষমতাসীন সরকার সব সময় তাদের নৈতিক অবস্থানের পক্ষে সাফাই গায়। রাজনৈতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এক্ষেত্রে মতভেদ থাকলেও সংঘাতের বলি হয়ে থাকে নারী-শিশুসহ সামরিক-বেসামরিক মানুষই।

যুক্তরাষ্ট্র এবং এর সামরিক হস্তক্ষেপ: যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন স্থান এবং স্বাধীন দেশে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছে ইরাক, আফগানিস্তান, ভিয়েতনাম, লিবিয়াসহ অনেক দেশ এবং অঞ্চল। সমালোচকরা দাবি করেন যে এই হস্তক্ষেপগুলো প্রায়শই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

প্রক্সি ওয়ার (ছায়াযুদ্ধ): স্নায়ুযুদ্ধের সময় কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোতে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট পক্ষগুলোকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।
বিশ্বে সামরিক উপস্থিতি: বিশ্বের ৭০০টিরও বেশি সামরিক ঘাঁটিসহ যুক্তরাষ্ট্রকে অনেকেই আক্রমণাত্মকভাবে প্রভাববলয় বাড়ানোর প্রচেষ্টায় ব্যস্ত একটি পরাশক্তি  হিসেবেই দেখে।

রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপ: ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল এবং ২০২২ সাল থেকে কিয়েভে চলমান সংঘাতের জন্য রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপগুলো ব্যাপকভাবে সমালোচিত এবং ঘৃণিত। রাশিয়া ২০০৮ সালে জর্জিয়াতে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিল এবং সিরিয়া ও লিবিয়ার সংঘাতে জড়িত। বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে সমর্থন দেয়ার অভিযোগ রয়েছে মস্কোর বিরুদ্ধে। দেশটি ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনগুলোকে সমর্থন করে (দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক) এবং জর্জিয়াতে (সাউথ ওসেটিয়া এবং আবখাজিয়া) একই ধরনের আন্দোলন সমর্থন করেছে, যা এই অঞ্চলগুলোকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

সাইবার আক্রমণ, ভুল তথ্য ছড়ানো এবং জ্বালানি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতার মতো পরোক্ষ অস্ত্র ব্যবহার করে ইউরোপের দেশগুলোকে দুর্বল করে রাখার অভিযোগ রয়েছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। একে হাইব্রিড যুদ্ধ বলা হয়ে থাকে।

চীন ও সীমান্ত বিরোধ: দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ, সেখানকার কৃত্রিম দ্বীপগুলোতে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করার ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংঘাত বেড়েই চলেছে। চীনের সঙ্গে ভারত এবং তাইওয়ানের সঙ্গেও সীমান্তবিরোধ বহাল রয়েছে।
চীনের দ্রুত সামরিক শক্তি বৃদ্ধি, বিশেষ করে বেইজিংয়ের নৌ ও ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় অনেকের মতে এটি গোটা পূর্ব এশিয়ায় সংঘাত উসকে দিচ্ছে।
কৌশলগত প্রভাব এবং নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর অংশ হিসেবে চীন এর বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ব্যবহার করে অর্থনৈতিক নির্ভরতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সৌদি আরব: ইয়েমেন সংঘাতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে সৌদি আরব। এটি করে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। সেখানে বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের জন্য রিয়াদের সামরিক হস্তক্ষেপ ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি আরব। আঞ্চলিক ক্ষমতা এবং আধিপত্য বজায় রাখতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংঘাতে বিভিন্ন পক্ষ এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন এমনটি অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে রিয়াদ।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অস্ত্রের ক্রেতা হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব যার অধিকাংশই আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এমন অস্ত্র সমৃদ্ধিকরণ আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে বলে মত দিয়েছে ।
ইরান: তেহরানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ দেশটি সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সমর্থন ও সামরিক সহযোগিতা দিয়ে যায়। হিজবুল্লাহ, হামাস, হুতির মতো একাধিক (প্রক্সি গ্রুপ) সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি সিরিয়া এবং ইয়েমেনের সংঘাতে জড়িত জড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী এই দেশটি। তেহরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং পরমাণু কর্মসূচি দেশটিকে ইসরায়েল, সৌদি আরব এবং পশ্চিমা শক্তির মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সেই সঙ্গে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা উসকে দিচ্ছে।

ইরানের বিরুদ্ধে জাতীয় স্বার্থে আক্রমণাত্মক আঞ্চলিক নীতি ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। সশস্ত্র শিয়াপন্থী গোষ্ঠীসহ ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে তার অনুগত গোষ্ঠীর উপস্থিতি বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে।

তুরস্কের সামরিক হস্তক্ষেপ: তুরস্ক সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তুরস্কের সঙ্গে গ্রিস এবং সাইপ্রাসের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। দেশটির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থীদের দমন ও কুর্দি জনগণের ওপর নিপীড়ন চালানোসহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

উত্তর কোরিয়া: উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকি এবং পরমাণু কর্মসূচি পূর্ব এশিয়ায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের শত্রুভাবাপন্ন বক্তব্য এবং এর বিচ্ছিন্নতাবাদী নীতির কারণে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে, বিশেষ করে কোরিয়া উপদ্বীপে।

ইসরায়েল: ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানগুলোকে অনেকেই আক্রমণাত্মক এবং আগ্রাসী অভিযান হিসেবে বিবেচনা করেন। পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল নিয়ে এই অঞ্চলে সরাসরি বিরোধ এবং সংঘাত শুরু করেছে তেল আবিব। গত ৭ অক্টোবর গাজায় শুরু হওয়া সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি মানুষ। দক্ষিণ লেবাননে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ নিধনে শুরু হওয়া আগ্রাসনে নিহত হয়েছে দুই হাজারের বেশি নিরপরাধ মানুষ।

সংযুক্ত আরব আমিরাত: সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে সংঘাত উসকে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ব্যাপকভাবে দেশটির সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর ফলে উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সংঘাত গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান কারণ।

ফ্রান্স: ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো অভিযোগ রয়েছে যে ইউরোপের এই দেশটি আফ্রিকায় সামরিক হস্তক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। মালি, নাইজার, মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকে সশস্ত্র গোষ্ঠী দমকে দেশটি সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এতে হতাহতের তালিকায় যোগ হচ্ছে শিশু-নারীসহ হাজারো নিরপরাধ মানুষ।

২০১১ সালে লিবিয়ায় পশ্চিমাদেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর আক্রমণে  ফ্রান্সের সংক্রিয় ভূমিকা ছিল। তাই লিবিয়ার চলমান গৃহযুদ্ধসহ অস্থিরতার জন্য দায়ী ফান্সকেই দায়ী করছেন অনেকে।

মানব সভ্যতার শুরু থেকেই গোত্রীয় দ্বন্দ্ব, সাম্রাজ্যে হানাহানি, জাতিগত যুদ্ধ-সংঘাত, আঞ্চলিক উত্তেজনা, বিশ্ব যুদ্ধ এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। সেই সঙ্গে ধর্মীয় সংঘাত, অন্ত:ধর্মীয় সহিংসতা, এক মতবাদের সঙ্গে ভিন্ন মতাবলম্বীর হানাহানিতে এই ধরনীর মাটি যুগে যুগে রঞ্জিত হয়েছে মানুষেরই এক এবং অভিন্ন লাল রক্তে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ