ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি ছাড়া রাজধানীতে রাস্তা কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি এই কাজের শর্ত ভঙ্গ করে এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে, তবে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করা হবে এবং ঠিকাদারসহ অন্যান্য দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, জানানো হয়েছে ডিএমপি থেকে।
বুধবার (১২ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ঢাকার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি সংক্রান্ত কাজগুলো দিনে পরিবর্তে রাতে দ্রুত শেষ করার কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। রাজধানীতে অনেক সময় দেখা যায়, কিছু সংস্থা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনে রাস্তা খুঁড়ে, যা মেরামত করতে ৭-৮ মাস সময় নেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়, যার ফলে যান চলাচলে সমস্যা তৈরি হয়।
এছাড়া, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় ট্রাফিক সিগন্যাল বা দিকনির্দেশক সাইনবোর্ডের অভাব, এবং এক লেনে কাজ করে অপর লেনে মাটি বা আবর্জনা ফেলে রাখার কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক সময় রাস্তার দুই পাশে একসাথে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়, যা রাস্তা সংকুচিত করে দেয়। কিছু ক্ষেত্রে, রাতের কাজের পর সঠিকভাবে রাস্তা ভরাট বা লোহার শিট না দেওয়া হলে দিনরাত যান চলাচলে সমস্যা হয়।
এ কারণে, ঢাকার যানজট বৃদ্ধি পায় এবং জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়, যা রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ক্ষতির কারণ হয়। এই অবস্থায়, ডিএমপি রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এবং কাটাকাটির কাজের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।
ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী:
১. ডিএমপি সদর দফতরের অনুমতি ছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করা যাবে না। ২. সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। ৩. কাজ শুরুর এবং শেষের তারিখ আগে ঘোষণা করতে হবে এবং সেই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। ৪. রাস্তা খননস্থলের ২০০ মিটার আগে-পরে ট্রাফিক নির্দেশনা এবং সিগন্যাল লাইট স্থাপন করতে হবে। ৫. কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ করতে হবে। ৬. পথচারী ও যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৭. রাস্তার কাটানো অংশে লোহার শিট স্থাপন করতে হবে। ৮. রাতের বেলা এক লেন খোঁড়া হলেও তা অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। ৯. একই রাস্তার দুই পাশে একসাথে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। ১০. ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে রাতের কাজ করা হবে। ১১. কোন রাস্তা রাতের বেলা খোঁড়া হলে সাত দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে এবং পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে মেরামত করতে হবে।
এছাড়া, এসব শর্ত ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করার পাশাপাশি ঠিকাদার এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।