টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল। দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানি। এরই মধ্যে কানায় কানায় ভরপুর হ্রদ তীরবর্তী এলাকা। হুমকির মুখে পড়েছে রাঙামাটি শহরের একমাত্র সংযোগ সড়ক বাঁধ। যা স্থানীয়দের কাছে ফিসারি বাঁধ নামে পরিচিত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তাই তলিয়ে যাচ্ছে হ্রদ তীরবর্তী নিন্মাঞ্চল। প্লাবিত হচ্ছে বসতঘর ও ফসলি জমি। একই সাথে ঝুঁকিতে পরেছে রাঙামাটি শহরের সাথে একমাত্র সংযোগ সড়ক বাঁধটিও। তাই উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে এরই মধ্যে বাঁধের উপর যানচলাচলের জন্য লাল পতাকা দিয়ে সর্তকতা জারি করেছে রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পর বাঁধ দিয়ে কৃতিম হ্রদ তৈরি করা হয় রাঙামাটিতে। যা এখন রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ নামে ব্যাপক পরিচিত। কিন্তু হ্রদ সৃষ্টি হওয়ার পর রাঙামাটিবাসীর জন্য নানা সুবিধার পাশাপাশি তৈরি হয় নানা অসুবিধা। বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক প্রভাব পরে। কাপ্তাই হ্রদের পানির কারণে নৌপথে হয় যোগযোগ। কিন্তু সে সময় রাঙামাটি শহরের সড়ক জঠিলতা দূর করতে তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজার, পর্যটন ও বনরূপা এলাকায় সড়ক পথে যানচলাচলের জন্য তৈরি করা হয় রাঙামাটি শহরের অভ্যান্তরিন সড়ক সংযোগ বাঁধ। যা ফিসারি বাঁধ নামে পরিচিত। এ বাঁধ নির্মাণ করার পর রাঙামাটি শহরের সৌন্দয্য বৃদ্ধি পাই আরও কয়েকগুন। কাপ্তাই হ্রদের বুক চিরে ছুটে চলে যানবাহন। আর চির সবুজ বৃক্ষগুলো রাঙামাটিবাসীর পাশপাশি আকর্ষণ করেছিল পর্যটকদেরও।
অভিযোগ রয়েছে অনেক বছর আগে রাঙামাটি শহর রক্ষাকারী ফিসারি বাঁধটি নির্মাণ হলেও স্থায়ীভাবে হয়নি একবারও সংষ্কার। তাই অযত্ন আর অবহেলায় কাপ্তাই হ্রদ গর্ভে বিলিন হচ্ছে বাঁধের পাড় আর পর্যটক আর্কষণকারী বৃক্ষগুলো। এই মধ্যে বাঁধের পাড় ভেঙে ছোট হয়ে এসেছে সড়কও। তাই সর্তকর্তা জারিও করা হয়েছে।
স্থানীয় মো. সোহেল বলেন, এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যে কোন মুহূর্তে বাঁধ ধসে বিলিন হতে পারে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে। তখন রাঙামাটিবাসীর জন্য মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়াবে এ সড়ক।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢেউয়ের কারণে বল্লাপ্লাং আর বালির বস্তা দিয়ে বাধ রক্ষা করার কাজ অব্যাহত আছে। সড়কে লাল পতাকা দিয়ে গাড়ি চলাচলের বিষয়েও সড়ক করা হয়েছে। এখন সাময়িকভাবে বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হবে। পানি কমে গেলে স্থায়ীভাবে রিটার্নিং ওয়ালের কাজ শুরু করা হবে। এরই মধ্যে ২৯৯ মিটার ওয়াল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরও ৩৬৪মিটার ওয়াল নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। এটা একটা প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ীত হচ্ছে। আশা করি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে ফিসারি বাঁধের ভাঙন স্থায়ীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে।