আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। ১৯৭০ সালের এদিনে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় গোর্কির আঘাতে দক্ষিণাঞ্চলের ৪ লাখেরও বেশি ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩৬ লাখ মানুষ। শুধু ভোলাতেই মারা যায় অন্তত লক্ষাধিক মানুষ। ঘটনার ৫৩ বছর পরও সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারছে না দক্ষিণ জনপদের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা। সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজও আঁতকে ওঠেন ভোলাবাসী।
সেই সময়ের চিত্র তুলে ধরেছিলে তৎকালীন পূর্বদেশ পত্রিকার ভোলা সংবাদদাতা হাবিবুর রহমান যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের জেলা সংবাদদাতা, স্থানীয় দৈনিক বাংলার কণ্ঠ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক এবং ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। হাবিবুর রহমান বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় গোর্কির ছোবলে লণ্ড-ভণ্ড হয়ে গিয়েছিল ভোলার বিস্তীর্ণ জনপদ। জেলার মনপুরা, চরফ্যাসন, চর নিজাম, ঢালচর, কুকরি-মুকরিসহ গোটা এলাকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল।
স্থানীয়দের মতে কয়েক লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল ভোলায়। তিনি বলেন, এই ঘটনার চার দিন পর তার পাঠানো প্রতিবেদন ‘কাঁদো বাঙালি কাঁদো, ভোলার গাছে গাছে ঝুলছে লাশ’ এই শিরোনামে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় খবর ছাপা হওয়ার পর দেশবাসী তথা বিশ্ববাসী এই সংবাদ পেয়েছিল।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই দিন ভোলার এমন কোন গ্রাম ছিল না যে গ্রামের কেউ না কেউ মারা যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় গাছে উঠে প্রাণ বাঁচায় অনেকে। ঘর-বাড়ি ফসল আর প্রিয়জন হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েন মানুষ। গোর্কির আঘাত এবং জলোচ্ছ্বাসের ভয়াবহতা এতই নির্মম ছিল যে সেই দিনের কথা মনে পড়লে আজও আতঙ্ক আর ভয়ে শিহরে ওঠে ভোলাবাসীর প্রাণ।
জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে উপকূলবাসীকে ঝড়- জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় প্রকৃতিক দুর্যোাগ বিশেষ করে ঝড়- জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় এখন সর্বোচ্চ সক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে জলায় ৮ শত ৬৯ ট আশ্রয় কেন্দ্র এবং ১২টি মুজিব কেল্লা রয়েছে। সেই সাথে রয়েছে ১৩ হাজার ৮০০ সিপিপি স্বেচ্ছাসেবী। তা ছাড়া দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা সব সময় মজুদ থাকে।