রংপুরে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে ক্লিনিকের পরিচালকের চাপে সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করেন এক প্রসূতি। এ ঘটনায় ক্লিনিকের পরিচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ ডিসি ক্রাইম অফিসে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান ডিসি ক্রাইম আবু মারুফ হোসেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক ও নগরীর কামারপাড়া এলাকার মৃত নজির উদ্দিন সরকারের ছেলে এমএস রহমান রনি (৫৮), শিশুটির ক্রেতা মধ্য পীরজাবাদ এলাকার সামসুল ইসলামের ছেলে রুবেল হোসেন রতন (৩০) ও রুবেলের স্ত্রী জেরিনা আক্তার বিথী (৩০)।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা যায়, নগরীর বুড়ারঘাট এলাকার লাবনী আক্তার ১৩ জানুয়ারি পল্লী চিকিৎসক এমএস রহমান রনির নগরীর বাসটার্মিনাল সংলগ্ন হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন। ওই দিন রাতে সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার সময় বিল পরিশোধে ব্যর্থ হন তিনি।
পরে ক্লিনিকের পরিচালক পূর্ব পরিচিত এমএস রহমান রনিকে বিলের টাকা পরে দেওয়ার কথা বললেও তাতে মন গলেনি। উল্টো নবজাতককে বিক্রি করে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ এবং বাকি টাকা নেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়।
এতে লাবনী আক্তার রাজী না হলে পরে নবজাতকের বাবা ওয়াসিম আকরামকে প্রলোভন দেখিয়ে ক্লিনিকের পরিচালক এমএস রহমান রনিতার পূর্ব পরিচিত জেরিনা আক্তার বিথী ও রুবেল হোসেন রতন দম্পতির কাছে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনা নবজাতকের মা লাবনী আক্তার পুলিশকে জানালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধারসহ নবজাতক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন জানান, শিশু বিক্রির বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমরা গুরুত্বসহকারে অভিযান পরিচালনা করে নবজাতককে উদ্ধার করে মায়ের কোলে তুলে দেই। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।