স্টাফ রিপোর্টার- ফরিদপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে । ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই মাসুদ ফকির মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম-সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফসহ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, যুগ্ম-আহ্বায়ক আজম খান, সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাজরিন রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ভিপি ইউসুফ, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার শিথিল, মামুনুর রশীদ মামুন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রথম সারির ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৪০০-৫০০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা করে চার থেকে পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে আহত করা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়ে।
গত রবিবার বিকেলে শহরের কোর্ট চত্বরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে প্রথমে পুলিশের বাধা ও নেতা-কর্মীদের টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নেয়ার চেষ্টার পর পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের হামলায় কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপনসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের কমপক্ষে ৩০ জন গুরুতর আহত হন বলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় শহিদুল ইসলাম বাবুলকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অনেকেই এখন হাসপাতালে ও বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিএনপি থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলায় যারা আহত হয়েছেন, তাদেরই আসামি করে এ মামলা করে পুলিশ।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, রবিবার বিকেলে পুলিশের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের শনাক্ত করা গেছে, মামলায় তাদের আসামি করা হয়। ভিডিওতে যাদের চেনা সম্ভব হয়নি, তাদের পরিচয় খোঁজা হচ্ছে। তবে সোমবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘রবিবার বিকেলে বিনা উস্কানিতে পুলিশ প্রথমে আমাদের ওপর চড়াও হয়। তারা আমাদের দিকে বন্দুক তাক করে সমাবেশ নষ্ট করার মতো ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। এরপর পুলিশের প্রশ্রয়েই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের হামলা করে আহত করেছে। যা সাংবাদিকদের মাধ্যমে সকলে জেনেছেন ও দেখেছেন। এখন তারাই উল্টো আহতদের আসামি করে মামলা করে।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হয় যে, পুলিশ এখন আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর ভূমিকায় নেই। তারা সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতা বাহিনী হয়ে উঠেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে বিএনপির সমাবেশে হামলা চালিয়ে তারা আমাদের নেতা-কর্মীদের পিটিয়েছে। এই পেটোয়া বাহিনী তাদের রক্ষার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।