স্টাফ রিপোর্টার- কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে (৪৩) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা। কুমিল্লার মেঘনা থানা এলাকা তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, জাকির সুলভ মূল্যে গাড়ি ক্রয় ও রেন্ট-এ-কার ব্যবসার নামে প্রতারণা করতেন। অন্যের কাছ থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে তা নিজের নামে বিক্রি ও ব্যবসা করেছেন। ভুক্তভোগীদের অনেকের গাড়ি বিক্রি করে প্রতারণা করেছেন তিনি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় জাকিরের নামে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় জাকির হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এসময় তার কাছ থেকে দুটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
ডিবির এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত জাকির পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এরপর কেনা গাড়ি রেন্ট এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় চালানো জন্য চুক্তি করতেন। একই গাড়ি এভাবে একাধিক ব্যক্তির সাথে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে চুক্তিও করতেন জাকির। একই রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সম্বলিত গাড়ি একাধিক জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করেন। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারো সঙ্গে শুধু ইঞ্জিন নাম্বার দিয়ে মাসিক কিস্তি পরিশোধের ভিত্তিতে কিছুদিন পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করে পরে কিস্তি দেওয়া বন্ধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করতেন। এছাড়াও আগে বিক্রয়কৃত গাড়ি স্বল্পমূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করতেন তিনি।
গ্রেফতারকৃত জাকির চেয়ারম্যান প্রতারিত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পুরো টাকা নিয়ে ডাউন পেমেন্টে গাড়ি কিনতেন। আবার ব্যাংক থেকে গাড়ির বিপরীতে কাস্টমারকে না জানিয়ে লোন সুবিধা নিতেন। দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় ৩০০ মানুষের সাথে তিনি এরূপ প্রতারণা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান হারুন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানা যায়, আত্মসাৎকৃত টাকা দিয়ে জাকির ঢাকায় ফ্ল্যাট ,বাড়ি, গাড়ি কিনেছেন। একই টাকায় সে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনে প্রার্থীতা পেতে উচ্চ পর্যায়ের এক নেতাকে প্রাডো গাড়ি উপহার দিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে কোটি টাকা খরচে তৈরি করেছেন আলিশান বাড়ি।একই উপায়ে সে বেশ কয়েকজন এমপি , পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথেও তিনি প্রতারনা করেছেন। সবশেষ তার ছেলেকে সে আমেরিকায় পাঠিয়েছেন। আগামী অক্টোবর নাগাদ তারও আমেরিকা চলে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা উপস্থিত ছিলেন।