Search
Close this search box.

সাত লক্ষ টাকার নতুন অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের!

রাকিব হাসান- গত মঙ্গলবার ভোর থেকে চলা র‌্যাবের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১৭ জন ও পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন এর ৩ সদস্যকে কে বান্দরবানের থানচির রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় বিপুল পরিমান দেশী বিদেশী অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে র‌্যাব সদস্যরা। পাহাড়ে স্বশস্ত্র প্রশিক্ষনের জন্য জঙ্গিরা ৭ লক্ষ টাকা জমা করেছিল বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বুধবার সকালে বান্দরবান র‌্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে যে, নব্য এই জঙ্গি সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য বান্দরবানের থানচির লোয়াংমুয়াল পাড়া হয়ে রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে ভোর থেকেই র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানিক দল রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। জঙ্গিরা র‌্যাবের উপস্তিতি টের পেয়ে গুলি চালালে র‌্যাব আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। জঙ্গি সদস্যদের সাথে কেএনএফ সদস্যরাও যোগ দেয়। মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ গোলাগুলির ঘটনা চলতে থাকে।

অধিনায়ক আরও বলেন, র‌্যাব শক্তি বৃদ্ধি করলে জঙ্গিরা পিছু হটে যায় এবং পাহাড়ে আত্মগোপনের চেষ্টা করে।এসময় র‌্যাব কৌশলে অভিযান চালিয়ে তাদের ১৭ জন সদস্য ও কুকিচিনে এর ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ আস সামী রহমান ওরফে সাদ (১৯), মোঃ সোহেল মোল্লা ওরফে সাইফুল্লাহ (২২), আল আমিন ফকির ওরফে মোস্তাক (১৯), মোঃ জহিরুল ইসলাম ওরফে ওমর ফারুক ওরফে সাংওয়াই (২৭), মোঃ মিরাজ শিকদার ওরফে আশরাফ হোসেন ওরফে দোলন (২৬), রিয়াজ শেখ ওরফে জায়েদ (২৪), মোঃ ওবায়দুল্লাহ ওরফে ওবায়দুল ওরফে সাকিব ওরফে  শান্ত (২০), জুয়েল মাহমুদ ওরফে মাহমুদ (২৭), মোঃ ইলিয়াস রহমান ওরফে তানজিল ওরফে সোহেল ওরফে থানবোয়াং (৩২), মোঃ হাবিবুর রহমান ওরফে মোড়া (২৩), মোঃ সাখাওয়াত হোসেইন ওরফে মাবরুর ওরফে রিসিং (২১), মোঃ আব্দুস সালাম রাকি ওরফে দুমচুক ওরফে রাসেল (২৮), যোবায়ের আহম্মেদ ওরফে আইমান ওরফে রেনাল ওরফে ওমর (২৯), মোঃ শামীম হোসেন ওরফে আবু হুরাইরা ওরফে রাফি ওরফে চামদুর (২৬), তাওয়াবুর রহমান সোহান ওরফে মিন্ট ওরফে মাওবক ওরফে জাকির আলম (২০), মোহাম্মদ মাহমুদ ডাকুয়া ওরফে হাকা (২০), মোহাম্মদ আবু হুরাইরা ওরফে মিরাজ ওরফে সাইসো (২২) এবং পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ এর সদস্য  লাল মোল সিয়াম বম , ফ্লাগ ক্রস ও মালসম পাংকুয়া (৫২)।

উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বোমা তৈরির সরঞ্ছামাদি, উগ্রবাদী বই, কন্টেন্ট, লিফলেট, অস্ত্র ক্রয়ের উদ্দেশ্যে রক্ষিত নগদ ৭ লক্ষ টাকা ও গ্রেফতারকৃতদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্ছামাদি।

তিনি জানান, রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির সাইজামপাড়া ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি এলাকায় অভিযানে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এর ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতারের পর উক্ত সংগঠনের বাকি সদস্যরা রামজুদান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকে। পরবর্তীতে র‌্যাবের অভিযানে জঙ্গিরা স্থান পরিবর্তন করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে জঙ্গিদের একটি দলটি বান্দরবানের থানচির লোয়াংমুয়াল পাড়া হয়ে রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।এ তথ্যের ভিত্তিতেই মূলত অভিযান চালানো হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত আগষ্টে  কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে ৮ জন তরুণের নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। উক্ত নিখোঁজের ঘটনায় নিখোঁজ তরুণদের পরিবার কুমিল্লার কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে র‌্যাব জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামক একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায় এবং র‌্যাব জানতে পারে যে, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষন গ্রহণ করছে। পরবর্তীতে পার্বত্য এলাকায় গত অক্টোবর থেকে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। ধারাবাহিক এ অভিযানে  রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি থেকে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের ৭ জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এর ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব।

কমান্ডার মঈন আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব বিভিন্ন সময়ে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন পাহাড়ীএলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। গত ১১ জানুয়ারি পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত ৫ সদস্যকে বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫জানুয়ারি জঙ্গি সংগঠনের এক সদস্যের কবরের সন্ধানে র‌্যাবের একটি দল বান্দরবানের লোয়াংমল পাড়ায় যায়।

বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে পরবর্তীতে গত ২৩ জানুয়ারি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যছড়ি এলাকার ইয়াহিয়া গার্ডেনের গহীন বনাঞ্চলে অভিযানপরিচালনা করে উক্ত সংগঠনের শূরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রনবীর ও বোমা বিশেষজ্ঞ বাশারকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন সময়ে র‌্যাবের পরিচালিত অভিযানে ইতোমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৩৮ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ীবিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ এর ১৪ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আস সামী কুমিল্লার একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক এ অধ্যয়ণরত ছিল। সে ২০২১ সালে কুবা মসজিদের ঈমাম হাবিবুল্লাহ এর মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত জুয়েল স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করে রাজধানী ঢাকায় জুতার ব্যবসা করত। ২০১৮ সালে সে সিরাজের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত সোহেল মোল্লা রাজধানীর একটি কলেজে বিএসসি ইঞ্ছিনিয়ারিং এ অধ্যয়নকালীন সময়ে গ্রেফতারকৃত জুয়েল মাহমুদ এর মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত আল আমিন পটুয়াখালীর একটি পলিটেকনিকেল কলেজে অধ্যয়ণরত ছিল। ২০২২ সালে পটুয়াখালীর নেছারউদ্দিন এর মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত মিরাজ শিকদার রাজধানীর একটি কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে। ২০২০ সালের শেষের দিকে পটুয়াখালীর সিরাজের মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত রিয়াজ ২০১৯ সালে রাজধানীর একটি কলেজে অধ্যয়নরত ছিল। পাশাপাশি সে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করত। ২০২১ সালের শেষের দিকে তার বন্ধুর মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত ওবায়দুল্লাহ কুতুবখালীর একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ণরত ছিল। সে পটুয়াখালী সিরাজের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে আস সামী, জুয়েল, সোহেল, আল আমিন, মিরাজ, রিয়াজ এবং ওবায়দুল্লাহ গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১২ জনের একটি গ্রুপের সাথে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য পাহাড়ে আসে।

গ্রেফতারকৃত আব্দুস সালাম মাদ্রাসায় পড়ালেখা করত। সে সংগঠনের শূরা সদস্য রাকিবের মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত যোবায়ের ২০১৪ সালে কুমিল্লার একটি মাদ্রাসা থেকে পড়ালেখা সম্পন্ন করে। সে লাকসাম থানার একটি মসজিদের ইমামতি করত। লাকসামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগঠনের আমীর মাহমুদের সাথে তার পরিচয় হয় এবং সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত শামীম মাদ্রাসা হতে পড়াশোনা সম্পন্ন করে। সে ২০১৯ সালের শেষের দিকে পটুয়াখালীর গ্রেফতারকৃত উমায়ের এর মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত তাওয়াবুর রহমান সিলেটের একটি কলেজে স্নাতকে অধ্যয়নরত ছিল। সামরিক শাখার প্রধান রনবীর এর মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত আবু হুরাইরা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ণরত ছিল। সে ২০২১ সালের প্রথম দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে এই সংগঠনের শুরা সদস্য রাকিবের সাথে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে রাকিবের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে এবং ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে হিজরতের উদ্দেশ্যে জিহাদের জন্য কুমিল্লা যায়। গ্রেফতারকৃত ইলিয়াস ২০১৬ সাল হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ছিল। প্রবাসে থাকাকালীন এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগঠনের আমীর মাহমুদের সাথে তার পরিচয় হয় এবং প্রবাসে থাকা অবস্থায় জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে সে দেশে ফিরে আসে। পরবর্তীতে হাসান সাইদ, আব্দুস সালাম, যোবায়ের, শামীম, মামুন, তাওয়াবুর, আবু হুরাইরা এবং ইলিয়াস ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ১৫ জনের একটি গ্রুপের সাথে বান্দরবানের পাহাড়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য আসে।

গ্রেফতারকৃত জহিরুল ইসলাম ২০১৯ সালে বিবিএ পাস করে। সংগঠনের নারায়ণগঞ্ছের এক সদস্যের মাধ্যমে সে এই সংগঠনে যোগদান করে এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কুমিল্লা থেকে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য পাহাড়ে গমন করে। গ্রেফতারকৃত মাহমুদ ডাকুয়া অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়ণরত ছিল। সে নীলক্ষেতে একটি বইয়ের দোকানে কাজ করতো। ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে নীলক্ষেতে জনৈক এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে সংগঠনের শুরা সদস্য রাকিবের সাথে তার পরিচয় হয় এবং তার মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত হাবিবুর রহমান স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করে। তার বরিশালে একটি লন্ড্রীর দোকান ছিল। ২০২০ সালে বরিশালের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে মাহমুদ ডাকুয়া এবং হাবিবুর রহমান একটি গ্রুপের সাথে ২০২১ সালের মার্চ মাসে পাহাড়ে প্রশিক্ষণের জন্য গমন করে। গ্রেফতারকৃত সাখাওয়াত হোসেইন কুমিল্লার স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন সময় তার এক সহপাঠীর মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগদান করে এবং ২০২২ সালে পাহাড়ে প্রশিক্ষণের জন্য আসে।

এদিকে গ্রেফতারকৃত লাল মোল সিয়াম বম রেমাক্রি এলাকার কেএনএফ এর একজন পুরাতন সদস্য। জঙ্গি বিরোধী অভিযানের পর থেকেই তার নেতৃত্বে কেটিসি এবং আশেপাশের এলাকা থেকে জঙ্গিদের পাহাড় থেকে আত্মগোপনে সমতলে আসার সকল ব্যবস্থা করার দায়িত্ব পালন করে। সে জঙ্গিদের জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদা, রশদ সরবরাহ ও অন্যান্য সকল ধরণের সহযোগিতা করত। তার চৌদ্দ মাইল এলাকায় তার একটি দোকান রয়েছে। সে আইন-শৃ․খলা বাহিনীর গতিবিধি অনুসরণ করে কেএনফ এর সদস্যদের অবগত করত। সে কেটিসি’তে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণে অত্যন্ত পারদর্শী।

গ্রেফতারকৃত ফ্লাগ ক্রস কেএনএফ এর একজন নেতৃস্থানীয় সদস্য ও প্রশিক্ষক। সে নাথান বোম এর অত্যন্ত ঘনিষ্ট । নাথান বোম এবং জঙ্গিদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করত সে । ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রশিক্ষনে আসা জঙ্গিদের বান্দরবান থেকে গাইড করে কেটিসি’তে পৌঁছে দেয়ার জন্য পথপ্রদর্শকের দায়িত্ব পালন করত। সর্বশেষ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১২ জনকে সে বান্দরবান শহর এলাকা থেকে নাথান বোমের কাছে পৌঁছে দেয়। এছাড়াও সমতল থেকে সকল ধরণের পার্সেল তার নামে আসত।

গ্রেফতারকৃত মালসম পাংকুয়া কেএনএফে এর একজন সদস্য। জঙ্গিদের নিকট থেকে প্রাপ্ত অর্থ নাথান বমের কাছে পৌঁছে দেয়া ছিল তার দায়িত্ব। জঙ্গিদের নিকট হতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে অবৈধ পথে অস্ত্রসহ সাংগঠনিক কাজে বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করত সে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী আভিযানিক পরিকল্পনা প্রনয়ন করা হবে। আমরা আশা করছি অচিরেই এ সংগঠনের প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে র‌্যাব।

এসময় তিনি পার্বত্য এলাকা থেকে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া ও পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যদের নিমূল না করা পর্যন্ত এ অভিযান চলবে বলেও সাংবাদিকদের জানান।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের গোয়ান্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মশিউর রহমান, আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ