স্টাফ রিপোর্টার- নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পলাতক ওয়ারেন্টভুক্ত একজন মহিলা সদস্য এবং অপর একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট । পৃথক দুটি অভিযানে রাজধানীর মিরপুর ও চট্টগামের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে তাদের দুজনকে গ্রেফতার করে।
বুধবার দুপুরে এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ আসলাম খান গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এর একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে ঢাকাস্থ মিরপুর ১২ নম্বরের সি ব্লক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন, জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর কদমতলী থানার মামলায় পলাতক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী উম্মে কুলসুম ওরফে তামান্না ওরফে পারুমী ওরফে পারুল ওরফে আসিয়া’কে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত উম্মে কুলসুম ২০০৭ সালে সবুজ নামক এক ব্যক্তির মাধ্যমে জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক-কে বিয়ের পর হতে সক্রিয় ভাবে জেএমবি’র কাজে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক তার বিরুদ্ধে এ সংক্রান্তে ২০১০ সালে কদমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করার পর হতে তিনি পলাতক ছিলেন। পলাতক থাকা অবস্থায় প্রথম দিকে কিছু দিন ঢাকার মগবাজারে তার এক বান্ধবীর বাসায় আত্মগোপনে থাকেন। পরে তিনি টঙ্গি এলাকায় বসবাস করে ইকরা মহিলা মাদরাসা, হুজুত আলী মাদরাসা এবং দারুল উলুম মহিলা মাদরাসায় চাকরি করেন। এই সময় উম্মে কুলসুম নিজের পরিচয়কে সম্পূর্ণরূপে আড়াল করার চেষ্টা করেন। তিনি তার প্রকৃত পরিচয় গোপন করে গাজীপুর এর ভোটার হন এবং গাজীপুর থেকে নিজ নামসহ পিতা-মাতার নাম পরিবর্তন করে নতুন জন্ম সনদ তৈরি করে ভোটার আইডি তৈরি করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ওই ভোটার আইডিতে তার নাম আসিয়া বলে উল্লেখ করে। পরবর্তীতে তিনি আসিয়া নামে সকলের নিকট পরিচয় দিতেন। সর্বশেষ তিনি মিরপুর ১২-তে আসিয়া নামে বসবাস শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে ভিন্ন ভিন্ন মামলায় মোট তিনটি গ্রেফতারী পরোয়ানা মূলতবী রয়েছে।
এদিকে অপর একটি অভিযানে এটিইউ এর একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (২মে) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তালিকাভুক্ত সন্ত্রসী মোঃ আরমান (৩২) কে গ্রেফতার করে । চান্দগাওঁ থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় সে পলাতক আসামী ।
পুলিশ সুপার আসলাম খান জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত আসামী জামিন নিয়ে আদালতে হাজিরা না দিয়ে দীর্ঘ ৪/৫ বছর যাবত পলাতক ছিলেন। সে একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী । দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে জনমণে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু হয়েছিলো । তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানা, সিএমপি চান্দগাওঁ ও বাকলিয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ অন্যান্য আইনে মোট ১০ টি মামলা রয়েছে ।
তাদের দুজনেকেই বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কার্যক্রম প্রকৃয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।