Search
Close this search box.

মৃত্যুর ছাব্বিশ বছর পরও আজও বর্তমান নায়ক সালমান শাহ!

সব্যসাচী দাশ- নিজের সময়ের থেকে এগিয়ে দেশের সিনেমার নন্দিত চিত্রনায়ক সালমান শাহ্ গত হয়েছেন ২৬ বছর। মাত্র ২৫ বছরের জীবন তাঁর। চার বছর কাজ করেছেন চলচ্চিত্রে। এই স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে রেখে গেছেন দর্শক নন্দিত সব চলচ্চিত্র। তাঁর সময়ে দেশের চলচ্চিত্রে নতুন একটি ধারার সূচনা হয়েছিল। সে সময়ে ছবিতে সালমান শাহ থাকা মানেই নিশ্চিত সাফল্য।

সিনেমা হলে দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। টিকিটের জন্য হাহাকার, এমনকি মারামারি! ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ১৯৯৬ সালে সালমান-শাবনূর অভিনীত সিনেমা ‘জীবন সংসার’ মুক্তি পায়। বন্ধুদের নিয়ে বাগেরহাটের ‘লাইট হল’ প্রেক্ষাগৃহে দেখতে যাই-এই ছবি। ইভিনিং শো। টিকিটের জন্য লম্বা লাইনের শেষে দাঁড়িয়ে কাউন্টারের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছি, হঠাৎ কাউন্টারের গেট বন্ধ করে দেয় কতৃপক্ষ। জানিয়ে দেয় শো এর সব টিকিট শেষ! লাইনে তখন দাঁড়িয়ে শ’খানেক দর্শক। মুহূর্তেই চিৎকার হৈচৈ শুরু হয়। এর মধ্যে কেউ একজন হাতে বেশ কিছু টিকিট নিয়ে কাউন্টারের পাশ থেকে হেঁটে যাচ্ছিল, সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েক জন চাড়াও হয়- ওই মানুষটা দিকে। আত্মরক্ষায় ব্যক্তিটি তার সঙ্গের মানুষদের ডাক দেন। শুরু হয় তুমুল মারপিট। আমরা ভয়ে ওই দিন সিনেমা না দেখে চলে আসি। পরে শুনতে পাই পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঘটনার দুই দিন পর ‘জীবন সংসার’ দেখি বন্ধুদেন সঙ্গে। দেখার পর মনে হয়েছে, এই সিনেমা দেখার জন্য দেড়ি করা ঠিক হয়নি। ভীষণ ভালো গেলেছিল ‘জীবন সংসার’। আজও সেই ভালোলাগা জীবন্ত। দেখতে দেখতে তাঁর মৃত্যুর দুই যুগ পেরিয়ে ২৬ শে পরেছে।

১৯৯৩ সালের মার্চ মাস। জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘ কেয়মত সে কেয়ামত তক’ ছবির কপিরাইট কিনে নেয় আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেড। বাংলাদেশে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নির্মাণের প্রস্তুতি নেন নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। তখনকার জনপ্রিয় মডেল ও আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী মৌসুমীর সঙ্গে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন সালমান। প্রথম ছবি দিয়ে সালমান নতুন যুগের সূচনা করেন। বাংলার অগণিত ভক্ত-দর্শকের হৃদয়ে রাতারাতি সালমান শাহ্ হয়ে ওঠে প্রিয় তারকার নাম। সালমানের জনপ্রিয়তার পারদ এতটাই আকাশচুম্বী ছিল যে পরবর্তী সময়ে আর কোনো নায়কই সেই উচ্চতা অতিক্রম করতে পারেননি।

অভিনয় এবং নিজস্ব্য স্টাইলে ফ্যাশন এর মাধ্যমে সালমান শাহ যেমন সবাইকে মোহাবিষ্ট করে রাখতেন, ঠিক তেমনি অমায়িক ব্যবহারের জন্য পেয়ে ছিলেন সবার প্রশংসা। চলচ্চিত্রে সালমানের জনপ্রিয়তা যখন আকাশচুম্বী, ঠিক তখনই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন এই ক্ষণজন্ম নক্ষত্র। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ মৃত্যু সংবাদে পাথর হয় তাঁর ভক্তকূল । বড় অসময়ে তাঁর চলে যাওয়া আজও কেউ মেনে নিতে পারেনি। যে কারণে তাঁর প্রতি অমোঘ ভালোবাসা আজও বর্তমান রয়ে গেছে অসংখ্য সালমান প্রেমীর হৃদয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ