ন্তান আত্মবিশ্বাসী হয়ে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাবার কি কোনো ভূমিকা রয়েছে? হ্যাঁ, সন্তানের বেড়ে ওঠার জন্য মায়ের ভূমিকা অনেক বেশি হলেও গবেষকদের মতে, সন্তানদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাবার ভূমিকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাবা হিসেবে সন্তানের জন্য শুধু অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা প্রদান করলেই হবে না। বরং সন্তানকে একজন সুখী ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বাবার সাহচর্যই বেশি প্রয়োজন।
সাধারণত আমাদের দেশে বাবার কাজ বলতে পরিবারের অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা প্রদান করাকে বোঝানো হয়। সন্তানের ভরণপোষণ,লেখাপড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া,পড়ালেখায় সাহায্য করা,প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দেওয়া,মূলত পরিবারের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করাই তার প্রধান কাজ। কিন্তু, গবেষণায় দেখা গেছে,সরাসরি শিশুর যত্নে বাবার প্রভাব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষকরা বলছেন,যেসব পিতা সরাসরি শিশুর বেড়ে ওঠায় কাজ করে এবং সময় দেয় ,তাদের শিশুদের বিকাশ অন্য শিশুদের তুলনায়, অর্থাৎ যারা বাবার সান্নিধ্য সরাসরি পায়নি তাদের চেয়ে অনেক বেশি হয়। যেসব শিশুরা পিতার সাহচর্যে বড় হয়,তারা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী,সাহসী,সুখী ও একাডেমিক লেখাপড়ায় ভালো করে থাকে। এইসব শিশুদের মধ্যে ডিপ্রেশন বা স্ট্রেস কম থাকে। তারা সহজেই সামাজিক যোগাযোগ এবং সংস্কৃতি ও মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হয়ে বেড়ে উঠে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক একজন বাবা কীভাবে সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী ও সুখী মানুষ হিসেবে বড় করতে পারেন:
১. শিশুদের সাথে কথা বলুন। নবজাতক হলেও কথা বলতে হবে কারণ আপনার চেহারার অভিব্যক্তি দেখে শিশু বুঝতে পারে।
২. শিশুকে ভালোবাসা দেখান। অনেক বাবাই সন্তানকে ভালোবাসেন কিন্তু প্রকাশ করেন না। গবেষণা বলছে শিশুকে ভালোবাসা দেখাতে হবে,আদর করা,আহ্লাদী ভাষা প্রয়োগ করা,স্পর্শ করা,জড়িয়ে ধরা খুবই জরুরী।
৩. শিশুদের কথা শুনতে হবে। তারা কি মুডে আছে তা বুঝে তাদেরকে ফলো করতে হবে।
৪. শিশুদের কাজের প্রশংসা করতে হবে। ধরুন তাকে কিছু নিয়ে আসতে বললে সে তা নিয়ে এলো, তখন তার কাজের জন্য বাহবা দিন,প্রশংসা ও উৎসাহিত করুন।
৫. শিশুদের কাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য সহযোগিতা করুন।
৬. সামাজিক মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও নিয়ম-নীতি শিখতে সাহায্য করুন। বাচ্চাদের সাথে কোয়ালিটি টাইম ব্যয় করুন। আপনারও ভালো সময় কাটবে।
৭. বাবাকে সন্তানের মডেল হতে হবে। যেমন আপনি যদি রাতের বেলা ব্রাশ করে ফ্রেস হয়ে শুতে যান, আপনার সন্তানও তাই করবে। শিশু বাবাকে অনুসরণ করে থাকে। তাই তাকে বই পড়ার মতো ভালো অভ্যাস গড়তে হলে আপনাকেও বই পড়তে হবে। তার আদর্শ মডেল হতে হবে।
যদিও এটা খু্ব আশার কথা যে,বর্তমানে বাবারা পরিবারে সন্তান লালন পালনে সরাসরি অবদান রাখছেন। অনেক বাবাই শিশুর খাদ্য থেকে শুরু করে সার্বিক যত্ন করে থাকেন। দিন বদলে যাচ্ছে,তাই সময়ের সাথে আপনাকেও বদলাতে হবে। পরিবারের দায়িত্বে,শিশুর যত্নে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে।