Search
Close this search box.

সাংবাদিকতা এবং ফেসবুক চর্চা এক জিনিস নয়: মোস্তাফা জব্বার

স্টাফ রিপোর্টার \ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সাংবাদিকতা এবং ফেসবুক চর্চা এক জিনিস নয়। ফেসবুকে আমরা যা কিছু লিখতে পারি, কিন্তু কলম আছে বলেই সংবাদপত্রে যা ইচ্ছে লেখা সম্ভব নয়। দায়িত্বশীলতা সাংবাদিকতারই অংশ।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা ও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা শীর্ষক’ এ আলোচনার আয়োজন করে জাগরণ টিভি ও নিউজ নাউ বাংলা। নিউজ নাউয়ের প্রধান সম্পাদক শামীমা দোলার সভাপতিত্বে এবং জাগরণ টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বি.বার্তা২৪ ডট নেটের বার্তা সম্পাদক হাবিবুর রহমান রোমেলসহ অন্যান্যরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের জন্য যে আইন করেছিলেন আমরা আজও তার বিকল্প কিছু করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেও তার বিরুদ্ধে অসত্য, গুজব প্রচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কজন সাংবাদিককে জেলে ঢুকিয়েছিলেন? বঙ্গবন্ধু কেন দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ৭৪ সালে কিভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সে জায়গাগুলোকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

গণমাধ্যমে ডিজিটাল প্লাটফর্মের প্রভাব বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যেসব সংবাদপত্র নিবন্ধনকৃত তাদের নিয়ে আমাদের চিন্তা কম করতে হয়। প্রতিদিন মিডিয়া বাড়ছে, কিন্তু দায়িত্বশীল সম্পাদকের সংখ্যা বাড়ছে না। যে কারণে অনেকে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন। তারা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করেন না।

কিশোরগন্ঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ বলেন, বাঙালির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগস্ট শেষ হচ্ছে। মানবসভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত এ মাসে আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি বাঙালির মহান নেতা, স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সেই রাতের হত্যাকাণ্ডের শিকার সব শহিদদের। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

ড. পারভেজ সাজ্জাদ বলেন, এখন সময় এসেছে এসব বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা করে তরুণ প্রজন্মেমের সামনে তুলে ধরার।

গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণগুলো আমরা যদি শুনি, তাহলে দেখা যায়- তিনি বারংবার ‘আমার মানুষ’ শব্দ দুটি ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ তিনি মানুষকে গুরুত্ব দিতেন। সাংবাদিকতাও কিন্তু মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি পড়লে দেখা যায়, তিনি সেখানেও সাংবাদিকতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু চাইতেন সাংবাদিকরা যেন স্বাধীনতা পান।

 

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার চেয়ে সাংবাদিকরা বেতন বেশি পেতেন। আইনের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। সম্পাদকের মর্যাদা সচিবের সমান দেওয়া হয়েছে। পরে বিএনপি-জামায়াত এটা বাতিল করে। পরবর্তীকালে সাংবাদিকদের কল্যাণে আর কোনো আইন করা হয়নি।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশ যখন পরিপূর্ণ ডিজিটাল হওয়ার পথে, তখনো স্বাধীনতাবিরোধীরা থেমে নেই। প্রতিনিয়ত তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। তবে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর দেশে তার দেওয়া লাল-সবুজের পতাকা থাকবে। কোনো স্বাধীনতাবিরোধীর স্থান হবে না।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু গণমাধ্যমবান্ধব নেতা ছিলেন। তিনি গণমাধ্যমের কল্যাণে নানা উদ্যোগও বাস্তবায়ন করেছেন। সাংবাদিকতায় স্বাধীনতাও তিনি দিয়েছেন। কাজেই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠতার ধারা অব্যাহত রেখে কাজ করতে হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, বঙ্গবন্ধু চাইতেন গণমাধ্যম সততার সাথে চলবে, সত্যের সাথে চলবে। আমরা সে পথে কতখানি আছি? গণমাধ্যমের উৎকর্ষ সাধনে আমাদের আরও বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য আরও নিবেদিত হতে হবে, আরও পথ পাড়ি দিতে হবে।

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব বলেন, ১৩/১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। অথচ এ প্রেক্ষাপটে এসেও নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। আসলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া গেছে কি না, সেটা দেখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ধর্মদর্শন অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তিনি বলে গেছেন।

শেখ রাসেল ফাউন্ডেশনের (ইউএসএ ইন্ক) সভাপতি ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ। আর সাংবাদিকতা মহান পেশা।

জাগরণ টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীন বলেন, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে গণমাধ্যমের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধু এদেশের গণমাধ্যমকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। কিন্তু সেই গণমাধ্যমকে আজকে আমরা কী দেখছি? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী নারীর পোশাক নিয়ে দাঁড়িয়ে বিরূপ মন্তব্য করলেন। সেটা গণমাধ্যমে কিভাবে উপস্থাপন করা হলো? একটা বিষয় সেখানে এলো না, এই কয়েকজন তো পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়ে এটি করেনি।

সভাপতির বক্তব্যে নিউজ নাউ সম্পাদক শামীমা দোলা বলেন, গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর যে অবদান সাংবাদিকদের সাথে তার যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সেটিকে তুলে ধরা এবং একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেসব মিথ্যাচার ও অপপ্রচার হয়েছে সেগুলোকেও তুলে ধরা আমাদের লক্ষ্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ