পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, রাষ্ট্র ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা পুলিশের প্রধান দায়িত্ব। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কর্মপরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবর্তিত হচ্ছে অপরাধ সংঘটনের কৌশল। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনীকে যুগোপযোগী ও আধুনিক করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩৯তম ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)-২০২১ ব্যাচের এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন, অভিবাদন গ্রহণ এবং বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মাঝে পদক বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘৯৯৯’ জনগণের আস্থার জায়গা দখল করে নিয়েছে। দেশ গঠন ও জনসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে জনবান্ধব ও সেবাধর্মী পুলিশিংয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। নবীন পুলিশ অফিসার হিসেবে মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে পুলিশকে হতে হবে জনগণের আস্থার প্রতীক, জনগণের পুলিশ।
সব লোভ লালসার ঊর্ধ্বে থেকে দেশপ্রেমের মহান ব্রতে দায়িত্ব পালনের জন্য ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টরদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নিরপরাধ, বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর যে কোন দেশের সার্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে। বাংলাদেশ আজ সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে একটি স্থিতিশীল, জঙ্গিমুক্ত, মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে সুপরিচিত।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার পুলিশের জনবল বৃদ্ধি, আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের মান উন্নয়ন করে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি বিশ্বমানের আইনি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়ন ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বাংলাদেশ পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
করোনা মহামারীকালে বাংলাদেশ পুলিশের সুমহান আত্মত্যাগ ও অনবদ্য অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এ কোয়ারেন্টাইনকালে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি খাবার সরবরাহ থেকে শুরু করে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) মীর রেজাউল আলমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে আইজিপি বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের পদক প্রদান করেন। পদকপ্রাপ্তরা হলেন, বেস্ট ক্যাডেট মঞ্জয় কুমার কুন্ডু , বেস্ট একাডেমিক আনিকা তাবাসসুম, বেস্ট ইন ফিল্ড এক্সিকিউটিভ রাবেয়া বসরী আঁখি, বেস্ট শ্যুটার তুর্ণ মোহাম্মাদ মুহতাসিম এবং বেস্ট সুইমার মো. তৌফিকুজ্জামান। প্যারেডে ৫১ জন নারীসহ ৭৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।