স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে সোমবার কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল (পাইলট) সালেম হামাদ আল-আকীল আল-নাবেত বাংলাদেশে আগমন করেন। তিনি আজ মঙ্গলবার সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান কাতার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের আমন্ত্রণে BIMDEX এর প্রদর্শনীতে যোগদানকালে কাতার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান’কে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানান। একান্ত সাক্ষাতে তাঁরা পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় ছাড়াও দু’দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক ও ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর সেনাসদরের হেলমেট কনফারেন্স রুমে প্রতিনিধি দলের জন্য বিশেষ ব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রণপ্রস্তুতি, উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, বিশ্বশান্তিতে ভূমিকা এবং সামগ্রিক প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে অবহিত হয়ে তিনি সেনাবাহিনীর বর্তমান নেতৃত্ব এবং সামগ্রিক উচ্চমান সম্পর্কে ভূয়সী প্রশংসা করেন। অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসনীয় ভূমিকার অনুপ্রেরণায় কাতারেও অনুরূপ উদ্যোগ এর সম্ভাব্যতা নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কাতারের প্রতিনিধি দলটি প্রশিক্ষণ বিনিময় এবং বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাদক দলের উপস্থিতি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেনাসদরে আগমনের পূর্বে সেনাকুঞ্জে তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালেম, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী প্রধানগণের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। উল্লেখ্য সফররত প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে পৌছানোর পর সন্ধ্যায় আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালেম এর সম্মানে সেনাপ্রধান কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন। নৈশভোজের পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময়ে কাতারের রাষ্ট্রদূত সিরাইয়া আলি আল-কাহতানি, কাতার সশস্ত্র বাহিনী এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ঊধর্তন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৮২তম লং কোর্সের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালেম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন।
ঐতিহ্যবাহী এই রাষ্ট্রপতি প্যারেডে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হওয়ায় তিনি সেনাবাহিনী প্রধানকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফের এই অত্যন্ত ফলপ্রসূ সফরের মধ্য দিয়ে কাতার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যকার নিবিড় যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো, যা দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফর শেষে কাতার প্রতিনিধিদল আগামীকার বাংলাদেশ থেকে কাতারে চলে যাবেন।