স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোটের আগে কথার লড়াইয়ের উত্তাপ ছড়ালেও শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হয়েছে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। এখন ফলাফলের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন সিইসি।
সবার কৌতূহল, কে হচ্ছেন গোমতী নদীপাড়ের ঐতিহ্যবাহী শহর কুমিল্লার নগরপিতা? দুবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু নাকি আরফানুল হক রিফাতকে নিয়ে জয়ের তীরে ভিড়তে পারবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ? এর বাইরে কী চমক দেখাবেন তরুণ প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার? সাধারণ ভোটারদের ধারণা, তাদের মধ্যেই ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর বাইরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম (হাতপাখা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি কামরুল আহসান বাবুল (হরিণ) নির্বাচনের মাঠে থাকেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নির্বাচনের ফল ঘোষনা করা হবে। এখান থেকে নির্বাচনের সর্বশেষ ফলাফল প্রকাশ হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন পরিস্থিতি বেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে এবং কোনো ধরনের সংঘর্ষ ছাড়াই সম্পাদিত হয়েছে। যতটা জানি, কুমিল্লার দুটি সেন্টারে বৃষ্টির কারণে একটু বিঘ্ন ঘটেছে। আমাদের অফিস যে তথ্য পেয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, ৬০ পারসেন্ট প্লাস-মাইনাস ভোট কাস্টিং হয়েছে। ইভিএমেও ভালোভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে।ইভিএম নিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি, যারা একটু বয়স্ক, তাদের একটু অসুবিধা হয়েছে।’
কুসিকে শতভাগ ইভিএমে ১০৫টি কেন্দ্রের ৬৪০টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ চলে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য এবারই প্রথম সব কেন্দ্র ও ভোটকক্ষে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। এবারের নির্বাচনে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের প্রথম বড় পরীক্ষাও। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচন ঘিরে এখন সবার নজর কুমিল্লায়।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে যাবতীয় ব্যবস্থা তারা নিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিন হাজার ৬০৮ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন সিটি নির্বাচনে। ৭৫টি চেকপোস্ট, ১০৫টি মোবাইল টিম, ১২ প্লাটুন বিজিবি, ৩০টি র্যাবের টিম, অর্ধশতাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নয়জন বিচারিক হাকিম ভোটের মাঠে থাকছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৭ সালের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল দুই লাখ সাত হাজার ৫৬৬ জন। ভোট পড়েছিল এক লাখ ৩২ হাজার ৬৯০। এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছিলেন ৬৮ হাজার ৯৪৮ ভোট, আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনজুম সুলতানার নৌকা পেয়েছিল ৫৭ হাজার ৮৬৩ ভোট। এর আগে সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ার পর ২০১২ সালের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান। সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন মনিরুল হক সাক্কু।