স্টাফ রিপোর্টার \ টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। বাড়িঘরে ঢুকেছে বন্যার পানি। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও বৈদ্যুতিক খুঁটি তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভয়াবহ এই বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক তলিয়ে গেছে। সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় পৌনে দুই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, সুনামগঞ্জ অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানি ছাতক ও সুনামগঞ্জ গ্রিড উপকেন্দ্রে প্রবেশ করায় নিরাপত্তার স্বার্থে ওই গ্রিড উপকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। উপকেন্দ্র বন্ধ থাকায় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেটের কুমারগাঁও উপকেন্দ্র ঝুঁকির মধ্যে আছে। যেকোনো সময় এই উপকেন্দ্রও বন্ধের প্রয়োজন হতে পারে। ফেঞ্চুগঞ্জ, বিবিয়ানা, বিয়ানীবাজার ও শ্রীমঙ্গল এলাকায় বন্যার পানি মারাত্মক না হওয়ার ফলে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং স্থাপনার দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ামাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। এ বিষয়ে প্রকৌশলী ও বিদ্যুৎ কর্মীরা সর্বদা তৎপর রয়েছে।
এদিকে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সিলেট নগরের কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রও বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনটা হলে পুরো সিলেট জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২-এর জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী ও সঞ্জীব কুমার রায় জানান, সমিতির সিলেট-১-এর অধীনে থাকা ৪ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক এবং সিলেট-২-এর অধীনে থাকা ২ লাখ ১২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে অন্তত ৯০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছেন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বন্যার অবনতি হওয়ায় অনেক স্থানেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। সিলেট নগরের কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের ভেতরেও বন্যার পানি ঢুকেছে। নিয়ন্ত্রণকক্ষ ছুঁইছুঁই করছে বন্যার পানি। পানি বেড়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষের ভেতরে ঢুকলে সিলেট জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির বলেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। যদি আরও দুই থেকে তিন ঘণ্টা এমনভাবে চলে, তাহলে নিয়ন্ত্রণকক্ষে পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা আছে। এতে পুরো সিলেট জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।