স্টাফ রিপোর্টার – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার একেবারে নতজানু সরকার। বন্ধুদের সমর্থন ছাড়া এই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের জনগণের মূল চাহিদা একটি গণতান্ত্রিক সরকার। যা এই সরকারের কাজ কর্মের মধ্যে নেই। অগণতান্ত্রিক সরকার হওয়ার কারণে এই সরকার তাদের দায়িত্ব বা ভূমিকা পালন করতে শতভাগ ব্যর্থ।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলের মহাসচিব এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে জিয়ার মাজারে এই শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারতের সঙ্গে যে আমাদের অভিন্ন সমস্যাগুলো আছে, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা, সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করা এবং অন্যান্য যে সমস্যাগুলো আছে, এই সমস্যাগুলোর সমাধান বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। পারেনি কারণ যে, ওদের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই। সেটাই হচ্ছে বড় কারণ। সেজন্য এখন পর্যন্ত সেই শক্তি নিয়ে এই সরকার কোনো কাজ করতে পারেনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছরে এই সরকার জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। তাই বহির্বিশ্বে দেশের স্বার্থ রক্ষা করার কোনও চুক্তি তাদের পক্ষে এক প্রকার দুরূহ কাজ। যেমন আমরা দেখেছি মিয়ানমারের ক্ষেত্রে। মিয়ানমার বার বার বাংলাদেশের ভেতরে গোলা মারছে, কিন্তু এই সরকার একটি প্রতিক্রিয়া জানানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না। একইভাবে ভারতের সঙ্গে আমাদের যে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ অন্যান্য যে সমস্যাগুলো আছে- সেগুলো এই সরকার সমাধান করতে পারেনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিবারই ভারতে যাওয়ার আগে দেশবাসীকে অনেক আশা দিয়ে যান। কিন্তু এর কোনোটাই হয় না। কারণ আমাদের পররাষ্ট্রনীতি খুবই দুর্বল। এই নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ওপর নির্ভর করে তারা জনগণ ও রাষ্ট্রের চাহিদা মতো কোনও চুক্তি বা কাজ করতে পারে না।
ভারতের পালাম বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে একজন প্রতিমন্ত্রী থাকার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। কারণ এখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আগের যে বক্তব্যগুলো এবং এই সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রীদের যে বক্তব্যগুলো, সেই বক্তব্য তো খুব স্পষ্ট যে, ওরা যেভাবেই রিসিভ করুক, তারা যাবে এবং সেটা নিয়ে তাদের খুব একটা বড় রকমের সমস্যা থাকবে না।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে একটাই কথা বলবো, আমরা এই কমিশন মানি না। এই নির্বাচন কমিশন গঠনই হয়েছে অবৈধ ও বেআইনিভাবে। আমরা বলেছি- এই কমিশন দিয়ে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ না হলে, অতীতে যে হাল হয়েছে এবারও তাই হবে। অর্থাৎ সেই কমিশন কখনও অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। সেই কারণে এই নির্বাচন কমিশনার কী বললেন, আর না বললেন তাতে বিএনপির কিছু যায় আসে না। বিএনপির লক্ষ্য একটাই- এই অবৈধ সরকারকে সরিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।