Search
Close this search box.

ক্রমেই বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ॥ মৃত্যু ১ আক্রান্ত ২৯৪

ক্রমেই বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ॥ মৃত্যু ১ আক্রান্ত ২৯৪

মলয় বিকাশ দেবনাথ – গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এনিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩ জনে। শনিবার সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের ঢাকায় ২৪৪ জন ও ঢাকার বাইরে ৫০ জন।বর্তমানে সারাদেশে এক হাজার ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৪৯ জন ও ঢাকার বাইরে ১৭৪ জন। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আট হাজার ৩৯০ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ৮৩২ জন ও ঢাকার বাইরে এক হাজার ৫৫৮ জন। একই সময় সারাদেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ৩৩৫ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯৭০ জন ও ঢাকার বাইরে এক হাজার ৩৬৫ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২৪৪ জনই ঢাকার বাসিন্দা। এ সময়ে ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৮৪৯ জনই ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আর ঢাকার বাইরে রয়েছেন সর্বমোট ১৭৪ জন রোগী।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৮ হাজার ৩৯০ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৬ হাজার ৮৩২ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৫৫৮ জন। সর্বমোট ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৭ হাজার ৩৩৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় সর্বমোট ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭০ জন এবং ঢাকার বাইরে সর্বমোট ছাড়প্রাপ্ত রোগী ১ হাজার ৩৬৫ জন। এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারা দেশে মাত্র ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ জন, মার্চ মাসে ২০ জন এবং এপ্রিল মাসে ২৩ জন ভর্তি হয়। মে মাস থেকে সংক্রমণ কিছুটা ঊর্ধ্বগামী হতে থাকে। ওই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ১৬৩ জন। জুন মাসে ৭৩৭ জন, জুলাই মাসে ১ হাজার ৫৭১ জন এবং গত মাসে (আগস্ট) সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু জ্বরের কোন ভ্যাক্সিন বা প্রতিকার ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিরোধই একমাত্র মূলমন্ত্র। এডিস মশার বিস্তার ধ্বংস এবং কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করাই একমাত্র পথ। থাকতে হবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিস্কার রাখতে হবে। ঘরের বাইরে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির পানি জমে জন্ম নিতে পারে মশার লার্ভা। পরিত্যাক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, পানির ট্যাংক, মাটির পাত্র, ডাবের খোসা, টিনের কৌটা, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদিও হতে পারে সহায়ক। নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে ফুলের টব। নজর রাখতে হবে ছাদ কৃষির দিকে যেন জমে থাকা পানিতে মশার লার্ভা না জন্মে। এডিস মশার লার্ভা জন্মাতে পারে টয়লেটের অব্যবহৃত কমোডের পানিতেও। বেসিনের জমে থাকা পানির দিকে সতর্ক থাকতে হবে। এ মশা সাধারণত দিনের বেলা বেশি চলাচল করে, বিশেষ করে আলো-আঁধারি সময়টাতে। যেমন সকাল এবং সন্ধ্যার প্রারম্ভে। এ কারণে সম্ভব হলে বাচ্চাদের হাফপ্যান্টের পরিবর্তে ফুলপ্যান্ট বা পাজামা পরানো যায়। প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায় মশার কয়েল বা স্প্রে। মশারী ব্যবহারে হেয়ালিপনার কোনো সুযোগ নেই। চলতি মাসের প্রথম দশদিনে সংক্রমণ এসে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০৯ জনে। ঢাকার পর এবছর কক্সবাজারে অস্বাভাবিক হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ