Search
Close this search box.
মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করে ভাষণে বলেন প্রধানমন্ত্রী

নারীদের বিচারপতি-সচিব-ডিসি-এসপি করার পথ সুগম করেছি

নারীদের বিচারপতি-সচিব-ডিসি-এসপি করার পথ সুগম করেছি

স্টাফ রিপোর্টার – বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি সম্মেলনস্থলে পৌঁছালে সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রীকে।

সম্মেলনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগিয়ে যাবে না। নারী-পুরুষকে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। আমি নারীদের বিচারপতি, সচিব, ডিসি, এসপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পথ সুগম করি। আজকে আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগিয়ে যাবে না। নারী-পুরুষকে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। আমি নারীদের বিচারপতি, সচিব, ডিসি, এসপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পথ সুগম করি। আজ আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।

ইসলাম ধর্মই একমাত্র নারীদের সমান অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম ধর্মই একমাত্র ধর্ম, যেখানে নারীদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্পদে স্বামী ও বাবার সম্পদে নারীর অধিকার দিয়েছে ইসলাম। অথচ ধর্মের নামে নারীদের ঘরে রেখে দিতে চায়, তারা জানে না।

তিনি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর করে দিচ্ছি। সেখানে নারী ও পুরুষকে সমান ভাগ দিচ্ছি। কেউ বউ ছেড়ে দিলে ওই বাড়ি হবে নারীর, পুরুষের নয়। যাতে নতুন ঘর পেয়ে কেউ নতুন বউ না নিয়ে আসে।
নারীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মেয়েরা স্বামীদের কাছে কত কিছু দাবি করে। আমার মাকে দেখিনি কোনোদিন কিছু দাবি করতে। বরং তিনি বাবাকে বলতেন, তুমি তোমার কাজ করে যাও। সংসারসহ সব কিছু আমি দেখবো। বাবাকে যখন হত্যা করে, তখনো বলেছিলেন তাকে যেহেতু হত্যা করেছ, আমাকেও হত্যা করো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ মহিলা লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা লীগের ৭২টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন করেন। মঞ্চে ওঠার পর শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সংগঠনের অন্য নেতৃবৃন্দ। এরপর সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিনা উত্তরীয় পড়ান। সংগঠনের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা ক্রিক।

এর আগেই প্রথমে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ করার মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়। প্রথমে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা। সংগঠনের সহ সভাপতি বনশ্রী বিশ্বাস পবিত্র গীতা পাঠ করেন। সংগঠনের সদস্য বাসন্তি চাকমা ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন। সংগঠনের সদস্য দিপীকা সমারদার বাইবেল পাঠ করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা উপস্থিত হওয়ার পর প্রথমে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়।

সকাল থেকেই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সম্মেলনস্থলের আশপাশে অবস্থান নেন। সম্মেলনে প্রবেশের জন্য একাধিক গেট রাখা হয়েছে। প্রবেশ পথগুলোয় লাইনে দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে। মহিলা আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সারাদেশের সাংগঠনিক জেলা থেকেও নেতাকর্মীদের ঢল নামে।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে প্রায় পাঁচ বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীদের মাঝে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে ছেয়ে যায়। এটি মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন।

সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রায় ৪০ জন নেত্রী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এর আগে, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ মার্চ পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক হন মাহমুদা বেগম। বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও এ পদে আগ্রহী থাকেন চলতি কমিটির সহসভাপতি আসমা জেরিন ঝুমু, শিরীন নাঈম পুনম, আজিজা খানম কেয়াসহ অনেকেই। নেতাকর্মীদের আশা বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ইমেজের নতুন নেতৃত্ব আসবে।

খণ্ড খণ্ড মিছিলে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে উদ্যোনে এসে জড়ো হন তারা। বিভিন্ন ধরনের রঙিন পোশাক পরিধান করে সন্মেলন উপস্থিত হন অনেকেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনস্থলে প্রবেশের জন্য একাধিক গেট রাখা হয়। প্রবেশ পথগুলোতে লাইনে দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে দেখা যায়। নিরাপত্তার জন্য তল্লাশি করে প্রবেশ করান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ