স্টাফ রিপোর্টার- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনেক সময় মন্তব্য করে থাকেন বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা। এ বিষয় আবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক করে তিনি বলেছেন, সময় হলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।
শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ গত নির্বাচনে রাশিয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য। ২০ থেকে ২১ জন কূটনীতিককে তারা বের করে দিয়েছে। তারা শক্তিশালী, সেজন্য এটি করতে পেরেছে। আমাদের সেই শক্তি নাই। সেজন্য এ পথে যাই না। সময় হলে আমরাও অ্যাকশনে যাবো।
বিদেশিদের উপদেশের প্রয়োজন নাই জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বলতে পারেন, আমরা শুনতে পারি। একটা সিস্টেম আছে, শিষ্ঠাচার আছে। তারা যদি কিছু বলতে চান, তারা সরকারকে জানাতে পারেন।
২২ নভেম্বর সকালে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে জেলা সাহিত্য মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, অন্য কোনও দেশের মানুষ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে জানতে চান না। এখন কিন্তু আমরা কলোনিয়াল দেশ না, আমরা কলোনি না। সুতরাং তাদের (রাষ্ট্রদূত) সেটি মনে রাখতে হবে। তারা তাদের রীতি অনুযায়ী, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত যে রীতি, সেটা মেনে চলবেন।
এর আগে ২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূতরা শিষ্টাচার সম্পর্কে অবগত এবং এ কারণে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এখন আমরা পরাধীন দেশ বা কলোনি নই এবং এটি তাদের মনে রাখা উচিত। তারা রীতি অনুযায়ী ব্যবহার করবে এটাই কাম্য।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের মন্তব্য করতে বাধ্য করছে কিছু গণমাধ্যম। আমাকে কিছু কিছু রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। কিছু কিছু সাংবাদিক তাদের প্রশ্ন করে উত্তর দিতে বাধ্য করে। নিজের ঘরের বিষয় অন্যের কাছে বলাটা লজ্জাজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘অন্য কোনও দেশের মানুষ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে জানতে চান না। এখন কিন্তু আমরা কলোনিয়াল দেশ না, আমরা কলোনি না। সুতরাং তাদের (রাষ্ট্রদূত) সেটি মনে রাখতে হবে। তারা তাদের রীতি অনুযায়ী, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত যে রীতি, সেটা মেনে চলবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে নিয়োগপ্রাপ্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি সম্প্রতি সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তিনি শুনেছেন পুলিশ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলেছে। আমি অন্য কোনও দেশে এ ধরনের উদাহরণ শুনিনি। এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি উচিত নয়। রাষ্ট্রদূত নাওকিকে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য এ বছর বঙ্গবন্ধু উৎকর্ষ পদকে ভূষিত করা হয়। তবে তার এই বক্তব্য নিয়ে সম্প্রতি রাজনীতিবিদরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছেন।