ভোটের দায়িত্ব পালনে সাহস রাখা জরুরি- ইসি রাশেদা
বিশেষ প্রতিনিধি- অনিয়মের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে পুনরায় ভোট ১৫ আসছে জানুয়ারির মধ্যেই হবে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা। একই সাথে নির্বাচন চলাকালে ভোটের দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি এই কাজটা হলো তাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমার ম্যাসেজ একটাই। আপনার সাহস নিয়ে কাজ করবেন। ভয় পাওয়ার তো কারণ দেখি না। ভয় পাবেন কেন? আমরা সরকারি কর্মচারী। এটা আমাদের রাষ্টীয় দায়িত্ব। তাই আমাদের ভয় পেলে চলবে না। ভয়ের উর্ধ্বে থাকতে হবে। এই সাহসটুকু ভিতর রাখতে হবেই।’
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে চরম অনিয়মের অভিযোগে সময় শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগেই ভোট বন্ধ ঘোষণা করে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। পরে ১২৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ ভোটের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব অবেহলার প্রমাণ পাওয়ায়, কমিশন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে যারা এই ভোটের দায়িত্ব নেবেন তাদেরও সব ধরনের ভয়ের ঊর্ধ্বে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এই কমিশনার।
গাইবান্ধা ইলেকশন খুব তাড়াতাড়ি হবে জানিয়ে ইসি রাশেদা বলেন, ‘এ সপ্তাহের শেষের দিকেই তফসিল ঘোষণা পাবেন। জানুয়ারির ১৫ তারিখের আগেই গাইবান্ধা-৫ আসনের শূন্যপদে পুনরায় ভোট অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে।’ এ বিষয়ে ইসি রাশেদা বলেন, ‘গাইবান্ধার ভোটে ওইদিনের ঘটনায় দোষী ১২৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকেই আর ভোটের দায়িত্ব দেয়া হবে না। যারা দোষী হয়েছে তাদের আর এই কাজে যুক্ত হওয়ার আর সুযোগ নেই। প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগে আইনে যা বলা আছে- ওই আইন অনুযায়ী যদি পাওয়া যায় ওই উপজেলায় না হয় অন্য আশপাশের উপজেলা থেকে আনতে হবে। আইনের নির্দেশনা অনুযায়ী আনা হবে। আইনের বাইরে কেউ যাবে না।’
রিটার্নি কর্মকর্তা কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কমিশন মিটিং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে যে কাকে আনা হবে। রিটার্নিং অফিসার দেয়ার মতো আমাদেরও বহুত কর্মকর্তা আছে।’ গাইবান্ধার এবারের ভোট সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে হবে বলে আশা প্রকাশ করে এই কমিশনার বলেন, ‘গাইবান্ধার পরে যে কয়টা ভোট করেছি কোথাও কোন ঝামেলা হয়নি, আশা করি এবারও হবে না। একটা ভাল নির্বাচনই করতে পারবো।
এসময় গাইবান্ধা-৫ আসনে ১৪৫ ভোট কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ হবে জানিয়ে ইসি রাশেদা বলেন, ‘তবে নতুন প্রার্থী হওয়ার কোন সুযোগ নাই। আইনে সেভাবেই বলা আছে। গাইবান্ধার তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে কোন আলোচনার দরকার নেই। যথারীতি সিসি ক্যামেরা থাকবে আমারা ওটা পর্যবেক্ষণ করবো। যতগুলো নির্বাচন হবে আমাদের অধীনে সেখানে ভোটাররা আসবে সুষ্ঠুভাবে ইচ্ছামতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এটাই আমাদের চাওয়া; নিরন্তর প্রচেষ্টা থাকবে। এক্ষেত্রে যতটা দ্রুত সম্ভব গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ- আরপিও বিধান সংশোধনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানা দরকার বলেও জানান তিনি।’
এদিকে কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কমিশনের দশম সভা আহ্বান করছে নির্বাচন কমিশন। ইসি সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে। তাতে অনিয়মের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনে ভোটের তারিখ কী হবে, কমিশন সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতিসহ নানা প্রসঙ্গে আলোচনা হবে।