স্টাফ রিপোর্টার – গত ১৫ বছরে প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেল চুরি করা হয়েছে। চক্রের এক সদস্যকে আটকের দাবি করেছেন গোয়েন্দারা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বুধবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, তুরাগ থানায় দায়ের হওয়া একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) তদন্তের সময় আব্দুল খালেক নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেলও উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা।
ডিবি প্রধান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খালেক স্বীকার করেছেন যে, তিনি গত ১৫ বছরে প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেল চুরি করেছেন। তার অন্তত ৭ জন সহযোগী ছিল যাদের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছিল। তবে তারা জামিনে বেরিয়ে আসার পরও একই অপরাধে লিপ্ত হন।
হারুন অর রশীদ বলেন, মোটরসাইকেল চুরি রোধ করাই যাচ্ছে না। প্রায়ই বাসার গ্যারেজ ও রাস্তা থেকে মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ আসে। পুরনো মোটরসাইকেল কেনার আগে বৈধ কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত এবং গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। চোরাই মাল কেনা একটা অপরাধ। কেউ যদি কাগজপত্রবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল কেনেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
ডিবিপ্রধান বলেন, মোটরসাইকেল চুরি রোধ করাই যাচ্ছে না। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে। বাসার গ্যারেজ, রাস্তা কিংবা অফিস থেকেও তালা ভেঙে অনেকের মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, গ্রেফতার খালেক একসময় চাঁদপুরে মোটরসাইকেলের মেকানিকের কাজ করতেন। মেকানিকের কাজ করা অবস্থায় চোরচক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং মোটরসাইকেল চুরি চক্রে জড়িয়ে পড়েন।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও হাওর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কম দামে বিক্রি হয়। এসব চোরাই মোটরসাইকেল কাগজপত্র না থাকলেও কিনে নিচ্ছেন অনেকে। আমরা বারবারই বলে যাচ্ছি, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাবো তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত করবো। কারণ চোরাই মাল কেনাও একটা অপরাধ। কেউ যদি কাগজপত্রবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল কেনেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আমরা আইগত ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, যে দোকানে ডুপ্লিকেট (নকল) চাবি বানানো হয় তারাও চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত। কারণ কেউ একজন ডুপ্লিকেট চাবি বানাতে এলে ওই দোকানি একই চাবি বানিয়ে তার কাছেও একটি রেখে দেন। তারা এই কাজটি নিয়মিত করছেন। যারা নকল চাবি বানান তাদের বিরুদ্ধে ডিবির অভিযান চলছে।
অনেক মানুষ ব্যাংক থেকে লোন করে অথবা ধারদেনা করে মোটরসাইকেল কেনেন জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, কষ্টের টাকায় কেনা মোটরসাইকেল যার চুরি হয় সেই বোঝেন। তাই আমি অনুরোধ করবো, গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল চুরি হলেই তাৎক্ষণিক নিকটস্থ থানায় জিডি করুন। এরপর জিডির কপিটি নিয়ে আমাদের ডিবির টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মোটরসাইকেল উদ্ধারে চেষ্টা করতে পারবো।
গ্রেফতারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, গ্রেফতার খালেক গত ১৫ বছরে এক হাজার মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করেছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার পূর্ব বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে একই চক্রের কাছ থেকে গত মাসে আমরা আরও ৪০টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছি।