স্টাফ রিপোর্টার – আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেছেন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে যারা বদলে দিতে চেয়েছিল তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে একটি গোষ্ঠী ছিল – যারা কিনা আরবি হরফে বাংলা লেখার চেষ্টা করেছিল, ভাষার তথাকথিত ইসলামীকরণের চেষ্টা করেছিল, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান পূর্ব পাকিস্তানের নিষিদ্ধ করেছিল, যারা আমাদের ভাষার ওপর হিংস্র থাবা দিয়েছিল ও আমাদের সংস্কৃতিকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল। এই গোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। এই গোষ্ঠী এখনো তাদের (বিএনপি) ছায়াতলে সক্রিয়।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ভারত বাংলাদেশ জাতীয় সাহিত্য উৎসব-২০২৩’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি।
তিনি বলেন, তারা ক্ষণে ক্ষণে অহেতুক পাঠ্যপুস্তক নিয়ে, বাংলা ভাষার নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে। এদের সবাই বিএনপির ছায়াতলে থেকে প্রশ্ন তুলে এবং দেশের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়াতে চায়।
বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে জানিয়ে হাসান মাহমুদ বলেন, ৩৫ কোটি বাঙালি সমগ্র পৃথিবীতে বাংলায় কথা বলে। সংখ্যার দিক দিয়ে আমাদের ভাষা পৃথিবীর ষষ্ঠতম ভাষা। আমাদের লক্ষ্য বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এই লক্ষ্য আর স্বপ্ন নিয়ে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, যারা ভাষার বিকৃতি ঘটায়, সংস্কৃতিকে বদলে দিতে চায় সেই অপশক্তিক ও এর পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার।
ড. হাসান মাহমুদ বলেন, প্রথম দুই কানাডা প্রবাসী (সালাম ও রফিক) প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন বাংলাকে আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। তখন জাতিসংঘের থেকে বলা হয়েছিল কোনো ব্যক্তির প্রস্তাব জাতিসংঘ গ্রহণ করবে না। যদি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয় সেটা জাতিসংঘ আমলে নেবে। তখন তাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যদিও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে হলে এটি সময়ের বিষয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিলম্ব না করে শিক্ষামন্ত্রীকে ইউনেসকো পাঠিয়ে তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। তারপর ভোটাভুটির মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটি ১৯৯২ সালের কথা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ও পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান।