স্টাফ রিপোর্টার – জাতীয় সংসদের ২৬৩ চাঁদপুর – ৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান গতকাল সংসদে বাজেটের উপর বক্তৃতাকালে ফরিদগঞ্জের আশাতীত উন্নয়নের জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন যে একসময়ের মাছের ভান্ডার ডাকাতিয়া নদী এক শ্রেণীর ভূমিদস্যূ ও ইটভাটা দস্যূর দখলে গিয়ে এখন কংকালের মতো হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও নালায় পরিণত হয়েছে। যদি এই নদী উদ্ধার করা যায় তাহলে ডাকাতিয়া অঞ্চলের মানুষ নিজেদের মাছের চাহিদা পূরণ করে সারাদেশে সরবরাহ করতে পারবে।
মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়নি, জাতির পিতার সহধর্মীনি এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তাদের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফট্যানেন্ট শেখ জামাল এবং তাদের নব পরিণীতা দুই বধূকেও হত্যা করা হয়েছে। শিশু রাসেলকে পর্যন্ত তার মায়ের কোলে ব্রাশ ফায়ার করে তার বক্ষ ঝাঝড়া করে দেওয়া হয়েছিল। এত নিষ্ঠুর এত নির্দয় ছিল খুনিরা। আজ আমি আপনাদের কাছে একটা কথা বলতে চাই ধরুণ শেখ রাসেল আমার আপনার সন্তান। তাকে এভাবে হত্যা করলে আমাদের কাছে কেমন মনে হবে। নেত্রীর কাছে কেমন মনে হয়েছে। কেমন মর্মবেদনার জন্ম দিয়েছিল। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের বিচার করেছেন এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। খুনিদের কয়েকজন এখনও দেশের বাইরে আছেন। তাদেরকেও নিয়ে এসে ফাঁসির কাঠগড়ায় দাড় করাতে হবে।
অবাক করার বিষয় হলো, যারা বেশি বেশি গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার কথা বলে এই খুনিরা সেই সব দেশেই আশ্রয়ে আছে। যেমন আমেরিকা ১৯৭১ সালে আমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিরোধিতা করেছিল। এমনকি সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল বাংলার মাটিকে তামা করার জন্য। শেষপর্যন্ত লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল। এমনকি এই তথাকথিত মানবতাবাদীরা একটু টু শব্দও করেনি। তারা বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি পর্যন্ত দেয়নি।
বাজেটের উপর আলোকপাত করে মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, এবার কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা পার করেও ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে এডিবিই আছে ২৬১ কোটি টাকার উপরে। কেউ কেউ বলছেন, এত বড় বাজেট নাকি আইএমএফের কাছে দেশ বাঁধা দিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলব যদি সাহস থাকে সব সম্ভব। আমাদের বঙ্গবন্ধু যেমন সাহসী ছিলেন, আমাদের নেত্রীও তেমনি সাহসী এবং দুরদর্শী। যে কারণে আইএমএফ এবং বিশ^ব্যাংক টাকা দেওয়া বন্ধ করার পরও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান সম্পন্ন করেছে। এটাই হচ্ছে সাহসী রাষ্ট্রনেতার পরিচয়।
এবার আমি নিজের এলাকার দুই একটা কথা বলতে চাই। আমার এলাকায় ১১০০ কি. মি. কাঁচা রাস্তা ছিল। তার বেশিরভাগই পাকা হয়ে গেছে। এখনও বেশ কিছু কাচা রাস্তা রয়ে গেছে যেগুলো পাকা করার জন্য এলজিইডি মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অবশ্য মন্ত্রী মহোদয় আমাদের ডাকাতিয়া নদীর উপরে ১০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন ব্রীজ তৈরীর জন্য। ব্রীজের কাজ চলছে। আমাদের ফরিদগঞ্জের ডাক বাংলোর কাজ অনেক এগিয়ে গেছে। ১০৭ বছরের ফরিদগঞ্জ থানায় এই প্রথম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দিয়েছেন। এজন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।