সংকটময় পরিস্থিতিতে চীন সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেছেন, গত ২৩ আগস্ট আমাদের প্রসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন।
চীন সেখানে ঘোষণা করে, ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীন বাংলাদেশকে ৩.৫ মিলিয়ন ডলারের সহযোগিতা দেবে। আমরা আজকে এই সহযোগিতার প্রথম চালান মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানে দিয়েছি।আগামী সপ্তাহে আরও আসবে। আমি আবারও বলতে চাই, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে চীন সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। আমরা বাংলাদেশের লড়াইয়ের সঙ্গে আছি।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেলে ৭০০ সেট ডেঙ্গু টেস্ট কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু দাবি করে—এমন একটি দেশ বাংলাদেশিদের ওপর একতরফা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু চীন কখনোই এটি করেনি। চীন বাংলাদেশের মানুষ ও জনগণকে সবসময় সহযোগিতা করেছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, আমরা বন্ধু। আমরা সবসময় একে অপরের পাশে ছিলাম। যখনই কারো সংকট হয়েছে, চীন বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিন বছর আগে কোভিড-১৯ মহামারির সময় চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে ডেঙ্গুর খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে চীনের অবশ্যই তাদের জন্য কিছু করা উচিৎ। এজন্য আমরা এই ডিভাইস দিয়েছি। এটি দিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা যাবে, যাতে পরিস্থিতি উন্নতি করা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, কিছু মানুষ তারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে সজাগ রয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। কিন্তু চীন কখনোই এটি করেনি। চীন বাংলাদেশের মানুষ ও জনগণকে সবসময় সহযোগিতা করেছে। চীন ও বাংলাদেশের জনগণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে। চীন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, অর্থনীতিতে সবসময় সহযোগিতা করে আসছে।
এর আগে, লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর মারাত্মক পরিস্থিতি চলছে। অনেকেই মারা গেছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের সেবায় ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মাসের পর মাস পরিশ্রম করছেন। চীন সবসময় বাংলাদেশের বন্ধু ও কৌশলগত সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশের সংকটময় মুহূর্তে চীন তাদের পাশে আছে। আগস্টে জোহানেসবার্গে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রেসিডেন্ট সেখানে বাংলাদেশকে সহযোগিতার ওপর জোর দেন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও চীন সরকার বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এজন্য চীন বাংলাদেশকে ৩.৫ মিলিয়ন সহযোগিতা দেবে।
এরই ধারাবাহিকতায় চীনা দূতাবাস এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭০০ সেট ডেঙ্গুকিট দিয়েছে, যা দিয়ে ১৮,০০০ এর বেশি মানুষের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাবে। আগামী সপ্তাহে চীন আরও ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট পাঠাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, বাংলাদেশে চীন দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি লি জিয়ান, ল্যাং ল্যাং ও জিং চ্যান, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল কাদের নাজিমসহ হাসাপাতালে কর্মকর্তারা।