কোনো নাগরিকের ভোটে বাধা দেওয়াকে ‘মানবাধিকারের লঙ্ঘন’ এবং ভোট দিতে বাধ্য করাবে ‘আচরণবিধির লঙ্ঘন’ বললেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
কামাল উদ্দিন আহমেদ, ভোট দেওয়া এবং ভোট অংশগ্রহণ করা একটি অধিকার। ভোট না দেওয়া এবং ভোটে অংশগ্রহণ না করাও একটা অধিকার।
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি ভোট দিতে চায়, তাকে যদি বাধা দেওয়া হয়, সেটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আর কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করা হলে, সেটি হবে আচরণবিধির লঙ্ঘন।’
পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক বলে এ সময় জানান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, কিন্তু আমাদের দেশে সে ধরনের কোনো নিয়ম নেই। সে কারণে আমি বলবো, ভোট যদি কেউ না দিতে চায় তাহলে সেটা তার ইচ্ছা।
তাই কেউ ভোট দিতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়ার অধিকার কারো নেই বলেও মন্তব্য করেন কামাল উদ্দিন আহমেদ।
ভোটের ৯ দিন আগে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মানবাধিকার ও নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠক করলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালও।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে সাত জানুয়ারি। দেশে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৭টি দল ভোটে অংশ নিয়েছে।
ভোটে আসা দলগুলোর মধ্যে রয়েছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টি।
তবে নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। ভোট প্রতিহত ও সরকার পতনের দাবিতে সহিংস কর্মসূচি চালাচ্ছে বিএনপি।
কয়েকটি দল ভোটে না আসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কামাল উদ্দিন বলেন, সবাইকে ভোটে আনতে নির্বাচন কমিশনের কোনো দায়িত্ব ছিল না বলে আমি মনে করি।
‘কারণ, কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। কেউ যদি না এসে থাকে, এটাও তাদের নিজস্ব অধিকার।’
তিনি মনে করেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন করতে হয়। আর প্রত্যেকেরই অধিকার রয়েছে নির্বাচন করা এবং নির্বাচিত হওয়া। এক্ষেত্রে কেউ যদি নির্বাচন না করতে চান, তাহলে তিনি এ অধিকারটি রাখলেন না।
‘এক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার ব্যাপারে বোধ হয় কোনো সংঘাত সৃষ্টি করে না,’ বলেন কামাল উদ্দিন।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে মানবাধিকার ও আচরণবিধির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কামাল উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, নির্বাচনে যেন আচরণবিধি ভঙ্গ করা না হয় এবং কর্মীরা যেন উত্তেজনা সৃষ্টি না করে সে বিষয়টি আমরা কমিশনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।
আর নির্বাচন কালীন সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যেন সমস্যা সৃষ্টি না হয় এবং তারা যেনো নিজের ভোট নিজে দিতে পারে তা সেটি নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান কামাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেক্ষেত্রে যেন যথাযথ ভূমিকা পালন করে, সে বিষয়টিও আমরা মনে করিয়ে দিয়েছি।