Search
Close this search box.

নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান যা বললেন

সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

রোববার (২৩ জুন) এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পরই রোববার বিকেলে সেনাসদরে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধান হিসেবে আমার প্রধান কাজ হচ্ছে সেনাবাহিনীকে সব সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখা। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা। সেই কাজটিই ইনশাল্লাহ আমি করে যাবো। এছাড়াও সেনাবাহিনী ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর দায়িত্ব পালন করে থাকে। সরকার যদি আমাদের সেই দায়িত্ব দেয় তাহলে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে সেটি পালন করবো। দুর্যোগ মোকাবেলায় যখন সরকার কোনো দায়িত্ব দেবে সেটাও আমরা আরো ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করবো।’

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমার আগে অতীতে যারা সেনাপ্রধান হিসেবে কাজ করেছেন তারা ভালোভাবে কাজ করেছেন। তারপরও শৃঙ্খলার একটি ইস্যু থেকেই যায়। সেনাবাহিনীকে সব সময় সুশৃঙ্খল রাখতে আমি কাজ করে যাবো। এছাড়া প্রশিক্ষণ আমরা সবসময় করছি, এই প্রশিক্ষণ যাতে সব সময় চালু থাকে সে দিকটা আমি দেখবো।’

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, বিশ^ শান্তির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিযুক্ত থেকে অপারেশন পরিচালনাসহ শান্তিরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। ইতিপূর্বে যারা সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন তারা নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে সেনাবাহিনীকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সেনাবাহিনীকে একটি সুন্দর জায়গায় পেয়েছি। ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে যখনই প্রয়োজন হবে জাতীয়তার স্বার্থে আমরা (সেনাবাহিনী) সর্বদা নিয়োজিত থাকবো।

সাম্প্রতিক সময়ে সেন্টমার্টিনের আশপাশে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অবস্থান ও রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, আমরা সমস্ত দেশের সঙ্গে যুক্ত আছি। মিয়ানমারের সঙ্গেও আমরা যুক্ত আছি এবং আমাদের ভালো যোগাযোগ আছে। প্রতিনিয়ত তাদের সরকারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াও আছে। তাছাড়াও আমরা এই মহুর্তে মনে করি না যে, তারা নিজেরাই নিজেদের দেশের ভেতরে যে ‘সিভিল ওয়ারের’ মতো নিয়োজিত আছে। ফলে অন্তত আমি মনে করি না যে, তারা আমাদের সঙ্গে অতিবাড়াবাড়ি রকমের কিছু করবে, এটা মনে করি না। তারপরও সেনাবাহিনী সব সময় এই বিষয়ে প্রস্তুত আছে। এখানে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি’ বলে একটি কথা আছে। যখন দুই দেশের বাহিনী একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে, আলোচনার মধ্যে থাকে তখন হঠাৎ করে কোন ফোর্সের পক্ষে যুদ্ধ শুরু করা খুব কঠিন। এটা হয় না। ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি খুব গুরুত্বপূর্ণ, আমরা সেটা অব্যাহত রেখেছি। আমরা কখনো হতাশ নই। আমি মনে করি, একদিন না একদিন এ সমস্যার সমাধান হবে। এ জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যুক্ত আছি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে আমরা রোহিঙ্গাদের ইস্যুটির সমাধান করতে চাচ্ছি।’

গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান বলেন, অতীতে সেনাবাহিনী প্রধানরা এভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। বিগত দুইজন সেনাপ্রধান কেবল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। সেখান থেকে আমি অনুধাবন করেছি যে, গণমাধ্যম সেনাবাহিনীর জন্য, দেশের জন্য সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপক রাখে। তাই গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো। তবে সেনাবাহিনী যেহেতু রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ তাই অনেক সময় কিছু সংবেদনশীল তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ওই তথ্য প্রচারের কারণে যাতে কোনোভাবেই সৈনিকদের মনোবল ভেঙে না পড়ে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখার অনুরোধ করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ