স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ ভারতকে আমরা ট্রানজিট দিলাম কেন? এটা নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া। আমাদের ট্রানজিট-তো আছেই। ত্রিপুরা থেকে বাস চলে আসে ঢাকায়, ঢাকা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত তো যাচ্ছে। এতে ক্ষতিটা কী হচ্ছে? বরং আমরা রাস্তার ভাড়া পাচ্ছি। সুবিধা পাচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ। অনেকে অর্থ উপার্জনও করছে।
বুধবার (৩ জুলাই) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর যেসব রেলপথ, নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ ছিল সেগুলো আমরা উন্মুক্ত করে দিচ্ছি। বিশ্বায়নের যুগে আমরা নিজেদের দরজা বন্ধ করে রাখতে পারি না।
তিনি বলেন, আজ পৃথিবীটা গ্লোবাল ভিলেজ, একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, এগুলোর দরজা বন্ধ করে থাকা যায় না। আমাদের ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়ান রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের সঙ্গে একটা যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা নেপাল-ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট করেছি ভারতে। এটা-তো কোনো একটা দেশ না, আঞ্চলিক ট্রানজিট সুবিধা এবং যোগাযোগ সুবিধার জন্য করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ নেপাল থেকে আমরা জলবিদ্যুৎ কেনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেখানে গ্রিড লাইন করা, আমরা সেই চুক্তি করেছি। সেটা আমরা কার্যকরও করছি। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর যেসব রেলপথ, নৌপথ যোগাযোগ বন্ধ ছিল, সেগুলো আমরা উন্মুক্ত করে দিচ্ছি। আজ ভারত রেল নিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ভুটান থেকে একটি রাস্তা যাচ্ছে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত। অথচ সেই রাস্তাটা যাচ্ছে বাংলাদেশকে বাইপাস করে। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে যে রোড হচ্ছে তা থেকে বিচ্ছিন্ন, কেন আমরা বিচ্ছিন্ন থাকব? ভারত চাচ্ছিল ভুটান থেকে এই রাস্তাটা বাংলাদেশ হয়ে, ভারত হয়ে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড যাবে। আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ সব কিছু কত সুবিধা হতো। সেটাও খালেদা জিয়া নাকচ করে দিয়েছিল। এই হলো অবস্থা। আমি প্রথমবার সরকারে এসে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা যুক্ত হতে পারিনি।
ভারত থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আসামের রুমালিগড় থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে এসেছি। পার্বতীপুর ডিপোতে সেই তেল আসছে। ক্ষতিটা কী হয়েছে? বরং আমরাই কিন্তু সস্তায় কিনতে পারছি। আমাদের দেশের জন্য, ওই অঞ্চলের মানুষের চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারি। উত্তরাঞ্চলে কোনো শিল্পায়ন হয়নি, এখন শিল্পায়নে আমরা যেতে পারি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও আমরা নির্মাণ করেছি। আমরা নিজেদের দরজা তো বন্ধ করে রাখতে পারি না। এটাই কথা।
খালেদা জিয়া মিয়ানমার থেকে গ্যাস আনার সুযোগ নষ্ট করেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কী সমস্যা দেশের জন্য করেছে দেখেন, মিয়ানমারে সেখানে গ্যাস ফিল্ডের গ্যাস, ভারত, চীন, জাপান সবাই চাচ্ছে। এই গ্যাসকে বাংলাদেশের ভেতর থেকে ভারতে নিয়ে যাবে। এই নিয়ে যাওয়ার সময় গ্যাস থেকে আমরা একটা ভাগ নেব। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামসহ ওই এলাকায় আমাদের গ্যাসের কোনো অভাবই হতো না। খালেদা জিয়া সেটা নিতে দেয়নি। কেন দেয়নি?
তিনি বলেন, আজ সেই গ্যাস নিচ্ছে চীন। আর কোনো দেশ-তো নিতে পারছে না। আমরা সরকারে আসার পর কথা বলেছিলাম মিয়ানমারের সঙ্গে, আনতে পারি কি না। কিন্তু সেটা সম্ভব না। তারা এটা অলরেডি দিয়ে দিয়েছে।