Search
Close this search box.

নিবন্ধন শর্তে ঘাটতি থাকায় বিএনপি সহ ১৪টি দলকে ইসি’র শোকজ

শাহনাজ পারভীন এলিস

রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধনের শর্ত পূরণের তথ্য নির্বাচন কমিশনের না দেওয়ায় ১৪টি দলকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) সময় চেয়ে আবেদন করায় ওই চার দলকে শর্ত পূরণে আরও একমাস সময় দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে দলগুলোকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির উপ-সচিব আব্দুল হালিম খান। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দলগুলোকে তথ্য না দেওয়ার যথাযথ কারণ জানাতে বলা হয়েছে।

যেসব দলকে শোকজ করা হয়েছে: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ),গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও গণতন্ত্রী পার্টি সময় পেরিয়ে গেলেও তথ্য দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, নিবন্ধিত সব দলের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। ৩৯টি দলের মধ্যে ২১টি দল যথাসময়ে তথ্য দিয়েছে। চারটি দল সময় চেয়ে আবেদন করেছে। তাদের এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আর ১৪টি দল সাড়া দেয়নি। তবে এগুলোর মধ্যে দুটি দল সময় শেষে তথ্য দিয়েছে। সেই দলকেও শোকজ করা হয়েছে। শোকজের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৪টি দল যারা দিতে পারেনি, তাদের কাছে যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে। (দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তি) বিদেশে থাকতে পারে, হয়তো সময় করতে পারেনি।

যারা সাড়া দেয়নি, তাদের নিবন্ধন হুমকির মুখে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, হুমকির মুখে বিষয়টি এমন নয়। নির্বাচন কমিশনের আইন আছে, তারা নিবন্ধনের শর্ত প্রতিপালন করছে কি না, তা দেখা হবে। নিবন্ধন বাতিলের উদ্দেশ্যে তো এগুলো করা হয় না। তবে যে সব শর্ত পালন করা কথা, সেগুলো যদি কেউ অবহেলা করে বা না করে, তাহলে ইসি তো তাদের অব্যাহত রাখতে পারে না। সেই রকম সিদ্ধান্ত তো নিতে হয়।

মো. আলমগীর বলেন, ১৪টি দলকে সময় দেওয়া হয়নি। কারণ দর্শানো হয়েছে। যদি ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয়, তাহলে তো আর শাস্তি দেওয়া যায় না। এই জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্যাখ্যা জানতে হয়। ব্যাখ্যা যদি সন্তোষজনক হয়, তাহলে ওকে। আর যদি না হয়, এক বছর ডিফল্ট হয়েছে-ধরা হবে। পরপর তিন বছর ডিফল্ট হলে নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। যারা সময়মতো তথ্য দিয়েছে, তাদের তথ্যগুলোও মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা হবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে। নিবন্ধিত পুরনো দল ঠিকমতো শর্ত পালন না করলে আমরা ওটা ফিল্ডে দেখব। নিবন্ধন বাতিলের শর্ত যদি পূরণ না করে, তাহলে তো বাতিল হবে।

তথ্য না দেয়া এসব দলের নিবন্ধন হুমকির মুখে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন বাতিল করার জন্য তো এগুলো করা হয় না। তবে আইন অনুযায়ী শর্ত পালনে যদি কোন দল অবহেলা দেখায় তাহলে তো হবেই। নির্বাচন কমিশনকে তো তখন একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, ‘ডকুমেন্টসগুলো যাচাই-বাছাই হচ্ছে। কাজটা সম্ভবত শেষের দিকে। আইনগত দিকগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। সচিবালয় আমাদের কাছে এগুলো উপস্থাপন করবে। ডকুমেন্টস ঠিক থাকলে সেগুলো মাঠ পর্যায়ে ঠিক আছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হবে। যেগুলোর কাগজপত্র ঠিক থাকবে না তাদের নিবন্ধন দেয়ার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো ঠিকঠাক শর্ত পালন করছে কিনা, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তার তদারকিতে নামছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে দলের অফিস নির্বাচিত কমিটি এবং সব স্তরে ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা তা জানতে চেয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর কাছে হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে গত ১০ অক্টোবর ৩৯টি দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ৩০ কার্যদিবস অর্থাৎ ২৬ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে কমিশনকে তথ্য দিতে বলেছিলো ইসি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ