২৩ শর্তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। একই শর্তে আজ শুক্রবার বিএনপিকেও নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকাল ৪টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এই তথ্য জানান।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ ক্ষমতাসীন দলের তিন সংগঠনের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করার কথা ছিল। তবে বিপত্তি বাধে সমাবেশের ভেন্যুর অনুমতিতে। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ক্ষমতাসীনদের এই তিন সংগঠনকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জিমনেশিয়াম মাঠ এলাকায় সমাবেশ করার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ।
তবে সেখানেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তি। এরপর পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে যান আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা। তবে মাঠটি আজ ব্যবহারের অনুপযোগী ছিল। যার ফলে বুধবার রাতে বাধ্য হয়েই সমাবেশ একদিন পেছানোর ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ।
পরবর্তীকালে আজ বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু জানান, পূর্ব নির্ধারিত বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটেই সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। সবশেষ বিকেল ৪টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন,
আশুরার চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও দুটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সম্মান জানিয়ে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। এজন্য তাদের ২৩টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। বিএনপিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং আওয়ামী লীগকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিএনপি কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে রাজারবাগ মোড় পর্যন্ত সমাবেশ করতে পারবে। আর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে মহানগর নাট্যমঞ্চ পর্যন্ত সমাবেশ করবে। এই সীমানার মধ্যেই মাইক স্থাপন করতে পারবে তারা। সমাবেশে ব্যাগ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আসা যাবে না। খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দিতে পারবেন না। সীমানার বাইরেও যাওয়া যাবে না। এছাড়া কোনো বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত সমাবেশ ঘিরে বড় ধরনের কোনো হুমকি নেই। তবে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছি না। আশুরা উপলক্ষে নিয়মিত অভিযান চলছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সমাবেশে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ, আনসার, র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও বিজিবিকে প্রস্তুত রাখা হবে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
আজকে সমাবেশ না করায় দুই দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সমাবেশকে ঘিরে কোনো হুমকি নেই। তবে, বড় দুই দলের কর্মসূচি থাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। সমাবেশকে ঘিরে পুলিশ, র্যাব, ও বিজিবি ও আনসার মোতায়েন থাকবে।