তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পদ একটু নড়বড়ে হয়ে গেছে। ‘তিনি যেভাবে মিথ্যাচার করছেন সম্ভবত তার মহাসচিবের পদটা একটু নড়বড়ে হয়ে গেছে। যে কারণে মিথ্যাচারের মাত্রাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।’ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ পরিচালনা ও নির্দেশনায় এবং খালেদা জিয়ার অনুমোদনক্রমে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে, পুরো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে নিচিহ্ন করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি পত্রপত্রিকায় দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল গ্রেনেড হামলা নিয়ে এমন একটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন এবং তিনি বলেছেন যে জায়গায় অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সেই জায়গায় না করে অন্য জায়গায় কেন করলো? আসলে আমরা সেদিন অনুমতি চেয়েছিলাম মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করার জন্য, কিন্তু মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করার অনুমতি আমাদের দেওয়া হয়নি। আগের দিন রাতের বেলা আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার জন্য বলা হয়। শেষ মুহূর্তে আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার জন্য মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। সে কারণে আমরা মুক্তাঙ্গন বাদ দিয়ে পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করার অনুমতি না দেওয়াই প্রমাণ করে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করার সুবিধার্থেই মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ মুক্তাঙ্গনে গ্রেনেড ছোড়ার সুবিধা সেভাবে নেই। আমাদের দলীয় কার্যালয়ের চারপাশে বিল্ডিং, সেসব বিল্ডিং থেকে গ্রেনেড ছোড়া যায়। সেজন্য সেখানে সমাবেশ করতে বলা হয়। সবসময় যখন আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করি তখন সেখানে বিল্ডিংয়ের ওপর সাদা পোশাকে বা পোশাকধারী পুলিশ থাকে, কিন্তু সেদিন কেউ ছিল না। একুশে আগস্ট কোনো পুলিশ পাহারায় ছিল না। পুলিশ পাহারার পরিবর্তে বিএনপি সরকার তারেক রহমান সেখানে জঙ্গিদের অবস্থান নিশ্চিত করেছিল এবং সেখান থেকে গ্রেনেডগুলো ছোড়া হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল এটি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যাচার করেছেন। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল মির্জা ফখরুলের মতো এক লোক এ রকম মিথ্যাচার করতে পারেন। তিনি যেহেতু বিএনপির মহাসচিব, তার প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার মতো এমন জঘন্য, কুৎসিত, বিভৎস্য, ঘৃণ্য মিথ্যাচার করার রাজনীতিক আমি দেখিনি। ২১ আগস্টের মতো এমন একটি ঘটনাকে তিনি বলেছেন এটা আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক। কী রকম মিথ্যাচার! জঘন্য, ঘৃণ্য, বিভৎস্য মিথ্যাচার একটি দলের মহাসচিব করতে পারেন। আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট তারা এটি ঘটিয়েছে। আমি গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষী, দুই দফা সাক্ষী দিয়েছি। সাক্ষী-প্রমাণে সবকিছু স্পষ্ট হয়েছে। সে মামলায় আসামিরা কনটেস্ট করেছে, এরপর তাদের শাস্তি হয়েছে। বিএনপিতো হত্যার রাজনীতি করে। যে দল হত্যার রাজনীতি করে সেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল।’
একুশে আগস্টের রায় বাস্তবায়ন নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিচার হয়েছে, শাস্তি হয়েছে। আসামিদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল হয়েছে। উচ্চ আদালতে বিচার হয় না, বিচারে কোনো ভুল হয়েছে কি না সেটি বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। উচ্চ আদালতে প্রক্রিয়া শেষ হলেই সাজা কার্যকর হবে। অনেক আসামি গ্রেফতার আছে।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল কাল যেটি বলেছেন, তার কথার মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় তারা কিছু ঘটাতে চাচ্ছেন। কার মুখ ফসকে তিনি বলেছেন। তারা এমন একটা কিছু ঘটাতে চাচ্ছেন যাতে দেশে নির্বাচন ভন্ডুল করা যায় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা যায়।’
তারেককে দেশে ফেরানোর বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি দেখছে।