Search
Close this search box.

১০ নভেম্বর গণমিছিল করবে বামজোট

দেশের জনগণকে সংঘাত-সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষার জন্য অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একইসাথে আগামী শুক্রবার (১০ নভেম্বর) শহীদ নূর হোসেন ও আমিনুল হুদা টিটো দিবসে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বামজোট। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী বামজোটের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দেওয়া হয়।

বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বক্তব্য পাঠ করেন বামজোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ।

বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বরং নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার জনমত ও বিরোধী দলসমূহের দাবি উপেক্ষা কারে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। যা নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি অন্যতম উপাদান।

এতে আরও বলা হয়, বুর্জোয়া উত্থানের কালে নিয়মতান্ত্রিক শাসন ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নির্বাচন চালু হয়েছিল, যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর পরেও একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা শাসকশ্রেণি গড়ে তুলতে পারেনি। সেজন্যই প্রতি ৫ বছর অন্তর ভোটের আগে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কম বেশি সংঘাত-সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এবারের পরিস্থিতি অনেক গভীর ও ভয়াবহ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নির্বাচন নিয়ে যে সংকট ও আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে তা নিরসনের উদ্যোগ না নিয়ে সরকার গ্রেপ্তার-দমনপীড়নের পথ বেছে নিয়ে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে যা দেশকে আরও গভীর সংকটে নিক্ষেপ করবে। নির্বাচন কমিশনও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থেকে সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কথা বলে সরকারের তল্পিবাহক হিসেবে একতরফাভাবে তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছে। যা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতকে অগণতান্ত্রিক পথে ঠেলে দেবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে ওই দিনই বামজোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে পর দিন থেকে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালনের জন্য জোটের নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের গণতন্ত্রকামী জনগণকে প্রস্তুত থাকার জন্য বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রহীনতা, স্বৈরাচারী পন্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা ও শাসকশ্রেণির নতজানু নীতির কারণে মার্কিন-ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী দেশসমূহ আমাদের দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাচ্ছে। যা আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

আরও বলা হয়, বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও ধর্মান্ধ মৌলবাদী অপশক্তি দেশকে অগণতান্ত্রিক শাসনে নিয়ে যাওয়ার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোট সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তির অপতৎপরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশবাসীকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সতর্ক থাকা ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদ)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ