এখানে ‘সালাম’ বলে প্রচলিত সালাম উদ্দেশ্য নেওয়া হয়নি, বরং নিরাপত্তার কথাবার্তা বোঝানো হয়েছে। অর্থাত্ মূর্খদের জবাবে তারা নিরাপত্তার কথা বলে, যেন অন্যরা কষ্ট না পায় এবং নিজেরা গুনাহগার না হয়।
প্রকৃতপক্ষে সবকিছুর সম্পর্ক জবানের সঙ্গে। জবানকে হেফাজত করতে পারলে নিজেকে সব ধরনের পাপ-পঙ্কিলতা, বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নাজাত পায় সে, চুপ থাকে যে।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৫০১)
আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি কথা তার জন্য অপকারী, উপকারী নয়। কেবল সত্ কাজের আদেশ, অসত্ কাজ থেকে নিষেধ এবং আল্লাহর জিকির তার জন্য লাভজনক।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস: ২৪১২)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হলো অনর্থক আচরণ পরিত্যাগ করা।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৭)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যতক্ষণ না স্বীয় জিহ্বা সংযত রাখতে পারবে, খোদাভীতির হক আদায় করতে পারবে না।’
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘সবসময় উত্তম কথা বলো, তাহলে উপকৃত হবে। অহেতুক কথাবার্তা বর্জন করো, তাহলে লজ্জা ও বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাবে।’
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির জন্য পাঁচটি স্বভাব স্বর্ণ রূপার চেয়ে বেশি মূল্যবান। ১. অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা। ২. প্রয়োজনীয় বিষয়ে অহেতুক কথা না বলা। ৩. কোনো মূর্খের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত না হওয়া। ৪. অনুপস্থিত কারো ব্যাপারে এমন কথা বলা, যা সে নিজের ব্যাপারে শুনতে চায়। ৫. এমনভাবে কাজ করা, যেন এই বিশ্বাস থাকে যে ভালো কাজের প্রতিদান দেওয়া হবে এবং মন্দ কাজের জন্য শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।’ (মাউসুয়াতু রাসায়েল)
লেখক :ফয়জুল্লাহ রিয়াদ
মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ
রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।