মিথুন আশরাফ ॥ চারবছর আগে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় বাংলাদেশ, তখন বেহাল অবস্থা হয়েছিল। ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে প্রথম টেস্টেও কী একই হাল হবে? এরআগের সফরে প্রথম ইনিংসেই ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ১০৩ রানেই গুটিয়ে গেল। প্রথমদিন শেষ হওয়ার আগে ২ উইকেটে ৯৫ রান করে দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৮ রানে পিছিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে দিনটিতে নিয়ন্ত্রণ তাদেরই ছিল। এবারও কী ইনিংস ব্যবধানে হার হবে?
তা সময়ই বলে দেবে। তবে প্রথম ইনিংসে যে অবস্থা দেখার মিলেছে, তাতে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার কেমার রোচ যে শুরুতেই বাংলাদেশ ইনিংসে ধ্বস নামানো শুরু করেন, তাতে প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। উইকেটে অসমান বাউন্স আর হালকা বাতাসের সামনে শুধু টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান (৫১) একাই যা লড়াই করেছেন। দলের বাকি ব্যাটাররা কিছুই করতে পারেননি।
ছয় ব্যাটার রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে যান। তারা হলেন-মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, নুরুল হাসান সোহান, মুস্তাফিজুর রহমান ও খালেদ আহমেদ। মুমিনুলের বাজে সময় যেন কাটছেই না। সাকিব ছাড়া আর দুইজন ব্যাটার দুই অংকের ঘরে পৌছাতে পারলেন, তামিম ইকবাল (২৯) ও সহ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস (১২)। আর দুইজনের মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ (২) ও এবাদত হোসেন (৩*) দুই অংকের ঘরেও যেতে পারেননি। বাংলাদেশ ব্যাটারদের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, কী করুণ দশা হয়েছে।
অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে। চার বছর আগে ২০১৮ সালে এই স্টেডিয়ামেই প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জ্বা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ৪৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। এবারও বেহাল দশা হলো।
রোচ শুরুতেই বাংলাদেশের ৩ রানের মধ্যে ২ উইকেট শিকার করে নেন। এরপর আর কোন উইকেট পাননি। তবে শুরুতেই যে ধাক্কাটা দেন, তা থেকে আর বের হতে পারেননি বাংলাদেশ ব্যাটাররা। আলজারি জোসেফ ও জেইডেন সিলস ৩টি করে উইকেট শিকার করে বাংলাদেশের ইনিংসের বারোটা বাজান। কাইল মেয়ার্সও নেন ২ উইকেট।
রোচ, জোসেফ, সিলস, মেয়ার্স; এই চার পেসার মিলেই বাংলাদেশের ১০ উইকেট দ্রুত তুলে নেন। ৪৫ রানেই বাংলাদেশের ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মাঝপথে সাকিব ও মিরাজ মিলে একটু আশা দেখান। কিন্তু ৭৭ রানে মিরাজ আউটের পর আবার ধ্বস নামা শুরু হয়।
দলকে অবশ্য একক চেষ্টায় শতরানের উপরে নিয়ে যেতে পারেন সাকিব। আবার টেস্ট অধিনায়কত্ব পেয়ে কঠিন দিনের দেখা পেলেন সাকিব। তবে নিজে দলকে ১০৩ রানে নিয়ে গিয়ে আউট হন। ৬৭ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রান করে, ২৮তম হাফসেঞ্চুরি করে সাকিব আউটের পর খালেদ আউট হতেই বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ হয়ে যায়|
চার বছর আগে ২০১৮ সালে এই স্টেডিয়ামে লাঞ্চের আগেই বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল। ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল। এবার লাঞ্চ বিরতি অতিক্রম করা গেছে। তবে লাঞ্চ বিরতির পর ৭ ওভারের মধ্যেই বাংলাদেশের ইনিংস খতম হয়ে যায়।
বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার পর বাকি দিনটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটাররা ব্যাটিং করেছেন। জন ক্যাম্পবেলকে (২৪) মুস্তাফিজুর রহমান ও রেইমন রেইফারকে (১১) এবাদত হোসেন আউট করেছেন ঠিক। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটারদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটাররা বুঝিয়ে দিয়েছেন, কিভাবে এই উইকেটে ব্যাটিং করতে হয়। ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (৪২*) ও এনক্রুমাহ বোনার (১২*) মিলে ব্যাটিং করছেন। দ্বিতীয় দিনে এই দুই ব্যাটার ব্যাটিং শুরু করবেন। এখন দেখা যাক, বাংলাদেশ বোলাররা কী করতে পারেন?