মিথুন আশরাফ – টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগামীকাল আসল মিশনে নামছে বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভে খেলতে নামছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই নেদারল্যান্ডসকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। এরআগে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানিয়ে দিয়েছেন, যা আগে কখনো হয়নি, এই বিশ্বকাপে তা করার সামর্থ্য আছে।
সাকিব ঠিকই বলেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এরআগে কখনোই বাংলাদেশ প্রথম রাউন্ডের পর কোন রাউন্ডে জিততে পারেনি। এবার সেই কাঙ্খিত জয়টি পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সুপার টুয়েলভে এবার সরাসরি খেলছে বাংলাদেশ। আর এই রাউন্ডে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ে। তার মানে নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে অন্তত হারানোর সুযোগ থাকছে। আর হারালে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের পর কোন রাউন্ডে জেতার ইতিহাসও গড়বে বাংলাদেশ। আর যদি দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোন দলকে হারানো যায়, তাহলে তো কথাই নেই। সাকিব হয়ত সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন।
সুপার টুয়েলভে খেলতে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আশার বাণী শুনিয়েছেন। বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জ আছে এবং যে চ্যালেঞ্জটা আমার নিতে হবে কিংবা আমার কিছু প্রমাণ করতে হবে। এখানে আমরা একটা বিশ্বকাপ খেলতে এসেছি, বাংলাদেশের হয়ে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য।’
সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘এমন একটা ফরম্যাট যেখানে আমরা কখনোই অত একটা ভালো করিনি। তবে আমি বিশ্বাস করি এই বিশ্বকাপে আমাদের এমন কিছু করার সামর্থ্য আছে যেটা আমরা এর আগে কোনো বিশ্বকাপে করিনি।’
কোন প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখতেও রাজি নন সাকিব, ‘সব ম্যাচই আমাদের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। সব ম্যাচ থেকেই ২ পয়েন্ট পাওয়ার আছে। আমরা প্রতি ম্যাচই জেতার জন্য খেলতে নামবো। এ বিশ্বকাপে কোনো দুর্বল ও সহজ দল নেই, যেমনটা আপনারা কোয়ালিফায়ারে (প্রথম রাউন্ড) দেখেছেন। যে দলকে আপনারা হয়তো ভেবেছেন জিতবে, তারা জিততে পারেনি।’
বাংলাদেশের আজকের প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল দল নেদারল্যান্ডস। তাতে করে স্বস্তি থাকছে। কিন্তু সাকিব মনে করছেন, ‘দেখুন এখানে বিশ্বকাপে আমাদের যে পাঁচটা ম্যাচ আছে। এই পাঁচটা ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। এখানে যার সঙ্গেই খেলি প্রস্তুতি একই থাকবে। এবং সেটাই থাকা উচিত। সেটা নেদারল্যান্ডস, বা দক্ষিণ আফ্রিকা বা ইন্ডিয়া বা পাকিস্তান অথবা জিম্বাবুয়ের সঙ্গে একই থাকবে। প্রস্তুতিতে বদলও আসবে না। চিন্তাতেও কোন পরিবর্তন আসবে না। তারা কিন্তু কোয়ালিফাই করেই এসেছে। প্রত্যাশিত দল হিসেবেই এসেছে। এই পারসেপশনটা হয়ত আপনারাই তৈরি করেছেন যে নেদারল্যান্ডস আসাতে বাংলাদেশ দল স্বস্তি বোধ করছে।’
সাকিব জানান যে দলই সামনে আসত একই মাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে নামতে চাইতেন তারা, ‘আমাদের দলের যে ধরণের চিন্তা ভাবনা আমরা কখনই এভাবে প্রস্তুতি নেই না। এবং আমার মনেও হয় না পৃথিবীর কোন দল এভাবে চিন্তাও করে। কে আসলে ভালো, কে আসলে খারাপ। সব সময় চেষ্টা করে দলকে জেতানোর জন্য। আমাদের দলের ভেতর ওরকম কোন ফিলিংস নাই। সেটা যদি শ্রীলঙ্কা আসত, সেটা যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসত তাহলেও আমরা যে প্রস্তুতি নিতাম আমরা অন্যান্য যে দলের সঙ্গে খেলব একই প্রস্তুতি নিব। যেটা আপনি বললেন স্বস্তি কিনা, দেশে ওরকম ইয়ে চলছে। এটা অবশ্যই মিডিয়ার তৈরি করা।’
নিজেদের প্রস্তুতি নিয়েও সন্তুষ্ট সাকিব। বললেন সবাই প্রস্তুত ঝাঁপিয়ে পড়তে, ‘আমি মনে করি আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে। ছেলেরা সবাই সুস্থ আছে, খেলার জন্য মুখিয়ে আছে। নিউজিল্যান্ডের চারটি ম্যাচের অভিজ্ঞতা আমাদের খুব কাজে লাগবে, কারণ হোবার্টের আবহাওয়া নিউজিল্যান্ডের মতোই। ছেলেরা প্রস্তুত, সবাই রোমাঞ্চিত হয়ে আছে।’