স্পিন ঘূর্ণিতে পাকিস্তানের ব্যাটারদের ১৬৭ রানে আটকে ফেলে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাকি কাজটা ভালোভাবেই সারলেন টাইগ্রেস ব্যাটাররা। এ রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১২৫ রানের রেকর্ড গড়েন মুর্শিদা খাতুন ও ফারজানা হক। ২৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের বড় জয় পায় বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে রেকর্ড ১২৫ রান। এর আগে, শুকতারা রহমান ও শারমিন আক্তারের করা ১১৩ রান ছিল সর্বোচ্চ জুটি।
জয়ের জন্য যখন মাত্র ৪২ রান প্রয়োজন, তখন নাশরা সান্ধুর বলে এলবিডব্লিউ হন ফারজানা হক। সাজঘরে ফেরার আগে ১১৩ বলে ৫ চারের মারে খেলেন ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস। নারীদের ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ফারজানার। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০ অর্ধশতক করেন তিনি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে একমাত্র সেঞ্চুরিও তার দখলে।
ফারজানার পর আরেক ওপেনার মুর্শিদাকেও ফেরান নাশরা। মাঠ ছাড়ার আগে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন মুর্শিদা। আগের ক্যারিয়ার সেরা ৫১ রানের ইনিংস ছাপিয়ে ১০৬ বলে ৬ চারের মারে এদিন তিনি করেন ৫৪ রান। এরপর ক্রিজে নেমে নিগার সুলতানা জ্যোতির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে বল মোকাবেলার আগেই রান আউট হন ফাহিমা। তবে এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। জ্যোতি ও সোবানা মোস্তারি দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। মোস্তারি ৩০ বলে ১৯ আর জ্যোতি ২৫ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে, ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। দুই ওপেনার সিধরা আমিন ও সাদাফ শামস দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বেশ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। প্রথম উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০ ওভার পর্যন্ত।
৩১ রান করে শামস আউট হলে ভাঙে ৬৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে মুনিবা আলি উইকেটে থিতু হয়েছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ রান। এরপর আর বড় কোনো জুটি গড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে স্বাগতিকরা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ছাড়া বাকি ৮ জনের মধ্যে মাত্র একজন দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছে।
ব্যাটারদের এমন আসা যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন সিধরা। তার অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে ভর করেই দেড়শো পেরোনো সংগ্রহ গড়ে পাকিস্তান। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন নাহিদা আক্তার। এ ছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেন রাবেয়া খান।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ওডিআইতেও পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ঘরের মাঠে দারুণ ছন্দে জ্যোতি-নাহিদারা। এর আগে সিরিজের প্রথমে ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৫ উইকেট হারে বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বোলারদের নৈপুণ্যে ১৬৯ রানের টার্গেট দিয়ে পাকিস্তানকে ১৬৯ রানেই আটকে দিয়েছিল টাইগ্রেসরা। এরপর সুপার ওভারে নাহিদা আক্তারের দুর্দান্ত বোলিং আর ব্যাটিংয়ে সোবানা মোস্তারি ও নিগার সুলতানার জ্যোতির নৈপুণ্যে জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ।